স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু

আমাদের দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ছোট বড় অনেক নদী জালের মত জড়িয়ে আছে এদেশে। তার মধ্যে পদ্মা একটি খরস্রোতময় নদী। এই নদীর উপর নির্মাধীন হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ্যতম এবং বহুমূখী সড়ক ও রেলওয়ে সেতু। এই সেতুর মাধ্যেমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজঙ্গয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা সংযুক্ত হবে।

এই পদ্মা সেতু নির্মান হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সাথে সংযোগ হবে। আমাদের বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু নির্মান হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের সবচেয়ে বিরাট চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট। এই ব্রিজের গঠন হবে দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল এবং কংক্রিট নির্মাণ ট্রাস। এই  সেতুর ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের মহাসড়ক পথ। সেতুর নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ(ডুয়েল গেজ)।

পদ্মা সেতুর ইতিহাসঃ

পদ্মা সেতুর  প্রকল্প নির্রমানের সংযুক্ত কিছু লোকের করাপশনের অভিযোগ উঠে তখন বিশ্বব্যাংক তার প্রতিশ্রুতি ফিরিয়ে নেয়। সেই সাথে অন্যান্য দাতারা সেটি অনুসরণ করে। সেই সময় এই ঘটনায় যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন কে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাতিল করা হয়। সেই সাথে জেলে যেতে হয়েছিল সচিব মোশারেফ হোসেন ভূইয়াকে। পরে মামলাটি তদন্ত্ব করে কোন অভিযোগ প্রমাণ না পাওয়ায় কানাডার আদালতে মামলাটি নিস্পত্তি করে দেয়। পরবর্তীতে সেই দুর্নীতির অভিযোগ আদালতে সমাপ্তি করে দেয়।

পদ্মা বহুমুখী সেতু

বাংলাদেশ সরকার পদ্মা সেতুর প্রকল্পটি বর্তমান নিজস্ব সম্পদ থেকে নির্মাণ করা হচ্ছে স্বপ্নের সেতু। পদ্মা সেতুর এ.ই.সি.ও.এম ডিজাইনে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্প আর্থ-সামাজিক পদ্মা নদীর উপর ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু’। এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো প্রকল্পের পরিকল্পনা করেন ২০০৭ সালের ২৮ আগস্ট সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার(ফখরুদ্দিন)।

তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফখরুদ্দিন ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প বাজেট পাস করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নতুন করে ২০১১ সালে ১১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে রেলপথ যুক্ত করেন। রেলপথ যুক্ত করায় এই প্রকল্পের মোট ব্যয় তখন ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল।

পরবর্তীতে এই পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ানো হয় আরো ৮ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই পদ্মা সেতুর মোট ব্যয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। সর্বপথম ২০১০ সালের এপ্রিলে এই প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যোগ্যতা প্রমাণের দরপত্র আহ্বান করে। পদ্মা সেতুর এই প্রকল্পটি তিনটি প্রধান প্রধান জেলাকে করবে। যে সব জেলা গুলো রাজধানীর সাথে সংযুক্ত হবে নির্মাণধীন হলেঃ- মুন্সীগঞ্জ শিমুলিয়া, মাওয়া পয়েন্ট ও উত্তর পাড়। দক্ষিণ পাড়ে শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর।

পদ্মা সেতুর বৈশিষ্ট্য

স্থানঃ মুন্সিগঞ্জের লৌহজঙ্গয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর।
অফিসিয়াল নামঃ পদ্মা বহুমুখী সেতু।
অতিক্রম করেঃ পদ্মা নদী।
নকশাকারঃ এ.ই.সি.ও.এম.
বহন করেঃ যানবাহন, ট্রেন।
রেললাইনঃ নিচতলায়(লেয়ার ডেকে)ডাবল গেজ।
উপাদানঃ কংক্রিট
মূল সেতুর মোট দৈর্ঘ্যঃ ৬.১৫ কিলোমিটার।
প্রস্থঃ ১৮.১০ মিটার।
সেতুর উচ্চতাঃ ১৩.৬ মিটার.
পাইলিং গভীরতাঃ ৩৮৩ ফুট।
পানির স্তর থেকে উচ্চতাঃ ৬০ ফুট।
ভায়াডাক্টঃ দুই প্রান্তে সর্বমোট ৩দশমিক ১৮ কিমি.
পিলারের সংখ্যাঃ ৪পিলারের সংখ্যাঃ০টি)
ভায়াডাক্ট পিলারঃ ৮১টি।
প্রতি পিলারের জন্য পাইলিংঃ ৬টি।
মোট পাইলিং সংখ্যাঃ মোট পাইলিং সংখ্যাঃ ২৬৪টি।
প্রতি পিলারের জন্য পাইলিংঃ ৬টি।
সংযোগ সড়কঃ দুই প্রান্তে ১৪কিমি.
নদীশাসনঃ দুই পাড়ে ১২কিমি.
সেতুতে যা থাকছেঃ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার লাইন পরিবহন সুবিধা।
ওয়েবসাইটঃ www.padmabridge.gov.bd

দেশীয় অর্থায়ন দিয়ে কি সেতু নির্মান করা সম্ভব ?

হ্যা সম্ভব কিন্তু একটু কঠিন হবে। আমাদের যা প্রয়োজন ছিলোঃ

  • আবেগ বাদ দিতে হবে
  • রাজনৈতিক বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ হতে পর্যালোচনা করা
  • সৎ অর্থনীতিবিদ ও দেশীয় বিজ্ঞদের নিয়ে গবেষণা করা।
  • এটাকে রাজনৈতিক থেকে দূরে রাখা।
  • বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো।
  • বাস্তবিক ভাবে চিন্তা করতে হবে যে আসলেই আমরা সেতু নির্মান করতে পারবো কি না ?

আমাদের সকলের সুপরিচিত বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবু আহমদ নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প চালানোর জন্য বেশ কিছু লেখালেখি করেছেন। তিনি কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তার এই নির্দেশনাগুলো দেখা যেতে পারে। এরপর থেকে ভবিষ্যতে নতুন কোনো প্রকল্প নেয়ার সময় অবশই দেশীয় অর্থায়নের কথা প্রথমে চিন্তা করতে হবে। এবং এ বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা করতে হবে।

পদ্মা সেতুর কর্মপরিকল্পনাঃ

পদ্মা সেতুর লেয়াউট কে মূলত পাঁচটি গাঁইটে ভাগ করা হয়েছে কোথায় কোথায় টোল প্লাজা এবং সার্ভিস এরিয়া হবে। সেই লেয়াউট গুলো হলোঃ মূল সেতু, জাজিরা অভিগমন(প্রবেশ পথ) রোড, নদী শাসন, টোল প্লাজা ইত্যাদি। তারপর মাওয়া অভিগমন(প্রবেশ পথ) রোড, টোল প্লাজা ইত্যাদি এবং মাওয়া ও জাজিরাদুই পারেই সার্ভিস এরিয়া। এই সেতুর নিয়োজিত নকশা বিষায়ক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেনুলোস কাজের ঠিকাদার নিয়োগের যাচাই বাছাই বিড ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা। তার পর টেন্ডার আহ্বানের পর টেন্ডার যাবতীয় তথ্য মূল্যায়ন এবং টেন্ডার কমিটিকে সহায়তা করা। সুতরাং যাবতীয় কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত পালন করা। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেল নকশা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজে তদারকী করা। ভেনুলোস কাজের বিভিন্ন গাঁইটের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

নদীশাসনঃ

পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের প্রথম দিকে পদ্মা নদীর তলদেশের মাটি খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হয়। পদ্মা নদীর তলদেশে স্বাভাবিক মাটি না পাওয়ায়। তাই পদ্মা সেতুর পাইলিং এর কাজ শুরুর পরে সমস্যা অনেক দেখা যায়। ব্যবস্থাপকরা নদীর তলদেশ আর্টিফিসিয়াল প্রক্রিয়ায় মাটি বদলে নতুন মাটি তৈরি করে পিলার তৈরি করার চেষ্টা করে। তবে স্ক্রিন গ্রাউটিং এই পদ্ধতিতেই বসানো হয় পদ্মা সেতু পিলার। বাংলাদেশে এই পদ্ধতি সর্ব প্রথম ব্যবহার করা হলো। এই ব্যবহার পদ্ধতি নমুনা বিশ্বে তেমন একটা নজির নেই। তবে প্রকৌশলীরা এ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ওপর থেকে পাইপের ছিদ্র দিয়ে কেমিক্যাল নদীর তলদেশে সমপসারণ করে মাটির শক্তিমত্তা বাড়িয়ে তুলেছে।

স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতেই ওই মাটিতে তৈরি করেছে পিলার। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পাইলের সঙ্গে স্টিলের ছোট ছোট পাইপ ওয়েল্ডিং করে দেন। সেই পাইপের ভেতর দিয়ে নদীর তলদেশে মাটিতে এক ধরনের কেমিক্যাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তখন সেই কেমিক্যালের প্রভাবে নদীর তলদেশে সেই মাটি শক্ত রূপ ধারণ করে। তার সেই মাটি পাইলের লোড বহনের জন্য পুরোপুরি সক্ষম হয়ে যায়। সেই ক্ষেত্র পাইল বসাতে আর কোনো সমস্যা হয় না।

পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নামঃ

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্পের নাম হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেলওয়ে সেতু। পদ্মা বহুমুখী সেতুর সম্পূর্ণ নকশা এইসিওএমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল তৈরি করে।

পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থ্যয়ানে নির্মানঃ

পদ্মা সেতু নির্মানে বিশ্বব্যাংক যখন ঘোষণা দিলে আর অর্থায়ন করবে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করবে।তখনি তিনি সেতু নির্মাণে বিলম্বের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও দাবি করেছিলেন। বাংলাদেশ সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর সরকারীদলের নেতারা দেশের মানমর্যাদার কথা, বিশ্বব্যাংকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির কথা এবং বিশ্বব্যাংকের সাহায্যের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জোরগলায় প্রচার-প্রতিবাদ শুরু করেছিলো।

বাংলাদেশ সরকারের  চেষ্টা করার ফলে নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতু নির্মান সম্ভব হয়। তবে এই কাজটি খুব কঠিন ভাবে সম্ভব হয় । আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বকে এ ঝুঁকি মোকাবেলায় সর্বাগ্রে দরকার জাতীয় ঐক্য। কিন্তু  সেটা কি আমাদের আছে। ভিনদেশী সংস্থা ও সরকারের সাথে নেগোশিয়েশনে আমরা কতটুকু দক্ষ।এর পূর্বে ইউনিকোল ও অক্সিডেন্টাল আমাদের গ্যাসে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়েছে, আমাদের দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিলো। ডাইরেক্ট  এবং ইনডাইরেক্ট  ক্ষতি করেছে কোটি কোটি টাকা।  তাদের আমরা  ছুতে ও পারিনি। আমাদের স্বার্থবিরোধি যে সমস্ত চুক্তি হয় বিদেশি কোম্পানিগুলোর সাথে তা স্কেচ করেন দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবীরা। এই আইনজীবীরা তখন দেশের চেয়ে নিজের পকেট বড় মনে করেন।

এই রকম পরিবেশে দেশের জন্য  উদবুদ্ধ হয়ে আমরা কতটুকু কাজ করব তা আমাদের মূল আলোচ্য বিষয়। এই ব্যাংক যে খুব ভালো নয় সেটা নতুন করে কিছু বালার নাই। সেটা এখন ইতিহাস। এই বিশ্বব্যাংকের তালিকায় কোন দেশ দারিদ্র বিমোচন করেছে এরকম কোন নজীর আছে বলে আমার মনে নাই। এটা শুধু সাম্রাজ্যবাদী ব্যক্তি সমাজ প্রতিষ্ঠান।  এদের মূল কাজ  হলো নিজেদের  সুবিধা ভোগ করা। অনেক আগের দিনের গ্রামের মহাজনের মত। সেই সব মহাজন ছাড়া কোন উপায় ছিলো না। অজ্ঞ অবস্থায় তাদের বিষপান করতে হয় কেনোনা উপায়া না থাকায়।

আসলে বিষয়টা এমন নয় যে এটা আমরাীই পথম জানতে পেরেছি। এটা আমরা আগে থেকে জানতাম।  কেন আমরা বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ঋণ আবেদন করেছিলাম ছিলাম? তখন কেন আমাদের মাথায় নিজস্ব অর্থায়নের কথা আসেনি? কেনোনা  আমাদের ধ্যন ধারনা হল বড় কোন উন্নয়ন প্রকল্প বিদেশী সহযোগীতা ছাড়া সম্ভব নয়।  সেই চিন্তা ধারনা থেকে আমারা রক্ষা হতে পারি নাই। আমরা যদি এই সিদ্ধান্ত টা  তখনই  নিতাম তাহলে এটা একটি যুগান্তকারী ডিসিশন হত।

তাহলে আমাদের এই দূরভিক্ষ সৃষ্টি হত না।আমাদের শুধু এই প্রকল্পের বেলায় বেলায় নয়। আমাদের  দেশে অনেক  প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করার কথা ভাবা যেত। আমরা এখন সব ধরনের প্রকল্প নিজস্ব  অর্থ দিয়ে করছি কারন আমরা ফেঁসে গেছি। কারন আমাদের উপর দুর্নীতির খড়গ খাড়া।সুতরাং এক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারলে এটা হবে আমাদের জন্য  স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসে এক বিরাট বিজয়। এইটা হবে এক বিরাট ইতিহাস। যেমন পানিতে বস বাস করে কুমিরের সাথে ঝগড়া করা পুরটাই বোকামি।তেমনি বিশ্বব্যাংকের সাথে ঝগড়া করাও বোকামি। বিশ্বব্যাংকের সাথে  ঝগড়া করা নির্তান্তই বোকামী।  এই বিশ্বব্যাংকের সাথে ঝগড়া  নিরাপদ নয়।

মানুষ অনেক দূর্বল কিন্তু বুদ্ধিমান। স্নায়ু যুদ্ধের যুগে তখন এটা খুব সহজ ছিল। এই যুদ্ধকে কাজে লাগিয়ে অনেক দেশ  যথেষ্ট ফায়দা লুটে ছিলো। কারন স্নায়ু যুদ্ধোটা  মানুষের মস্তিস্বকে হিপ্নোটাইস করে এই যুদ্ধো ক্ষেত্র কাজে লাগিয়েছে অনেক দেশ তার মধ্যে ভারত আছে। এই ধরনের বড় বড় উদাহরন গুলোর মধ্যে হল মিশরের জামাল নাসের একটি বড় উদাহরন। মিশরের জামাল নাসের যখন ক্ষমতায় ছিলেন। মিশরে জামাল নাসের একটি বাঁধ নির্মাণের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর কাছে সাহায্যের আশা কর ছিলেন। যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যথেষ্ট সারা না দিলে।

মিশরের জামাল নাসের আসেয়ান বাঁধ নির্মাণের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য চাইলেন। রাসিয়ান অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়ন আসেয়ান বাঁধ নির্মাণের জন্য তসহযোগিতা করেছিলো। তখন থেকে মিশরের জামাল নাসের  যতদিন রাষ্টীয় ক্ষমতায় ছিলেন। তখন থেকে মিসরের পররাষ্ট্রনীতিতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষ অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। এই রকম  একটি বাঁধ নির্মাণের ঘটনা কেন্দ্র করে তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে দেশটির পরাষ্টনীতিতে। তবে জামাল নাসেরের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বে  পরিবেশ ছিল বন্ধুসুলভ। তৎকালীন সময় ছিল স্নায়ুযুদ্ধের।

তৎকালীন দুই পরাশক্তির দন্দকে পুঁজি করে দিতীয় বিশ্বের দেশ সমূহ যথেষ্ট ফায়দা লুট করতে পারত। বাংলাদেশের অর্থাৎ আমাদের  প্রতিবেশী দেশ ভারত ও তার মধ্যে আছে। অমত্ত যুদ্ধের দ্বন্দ্বকে ভারত বেশ নিজের কাজে লাগাতে পেরেছিল। তবে বর্তমান তো আর সেই পরিস্থিতি নেই। বর্তমান সম্রাজ্য বা বিশ্ব পরিচালনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্য। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্য আজকের বিশ্বে তারাই পুঁজিবাদী বা মূল শাসক দুনিয়ার। বিশ্বব্যাংক ব্যাংক পরিচালনা করে এই পুজিবাদীরাষ্ট্র্য গুলো তাদেরই তল্পীবাহক বিশ্বব্যাংক। তাহলে আমরা সেখান থেকে কি ধরনের সাহায্য সহযোগীতা পাওয়ার আশা করতে পারি? মোটেও না।

তাই বর্তমান  বিশ্বব্যাংক কিংবা মার্কিন যুক্তড়াষ্ট্র্যের সাথে কটুক্তি বা ঝগড়া করা মোটেও নিরাপদ। যেহেতু আমেরিকার মতো দেশের সাথে ঝগড়া করার সামর্থ্য। সুতরাং সে জন্য আমাদের হতে হবে অনেক বেশি ইন্টেলিজেন্ট, ডিপ্লোমেটিক, এবং টেকনিক্যাংলী। এই সেতু যদি বাংলাদেশ সত্যি  নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মান করে তা হবে বিশ্বের কাছে হবে এক মাইল ফলক ঘটনা হ্যা কিন্তু বাংলাদেশ এই পদ্মা সেতু নির্মান করতে সফল হতে পেরেছে। আবার নিজ্বস্য অর্থ্যয়নের নির্মান করেলে দুটি দিক লক্ষ করা যাবে একটি হলো ভাল দিক অন্যটি হলে খারাপ বা বিপদ।

আমরা যদি শুধু অর্থনৈতিক হিসাব করি আর যদি গানিতিক হিসাব না করি তাহলে আমাদের একটি বিরাট একটা ভুল সিদ্ধান্ত হবে। আমরা যদি এটা শুধু একটা গানিতিক হিসাব মনে করি যে অর্থের পর্যাপ্ততার উপর সব কিছু নির্ভর করে। কিন্তু এর উপর রয়েছে বিশেষ সামষ্টিগত বা অর্থনীতির হিসাব নিকাশ ব্যপার। এই  পুরো বিষয়টা বাংলাদেশের সমগ্র অর্থনীতির উপর বিশেষভাবে একটি প্রভাব ফেলবে। এই পদ্মা সেতুর মোট খরচের পরিমাণ বেশিরভাগ (প্রায় ৬০%) বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে।

তবে এই  বিরাট ব্যয় পরিশোধ বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট একটি প্রভাব ফেলবে।বাংলাদেশের এই বিরাট প্রভাবটি  পড়বে বিদেশী লেনদেন হার এর উপর  ইত্যাদি বিষয়ের উপর। বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার, মূল্য পরিস্থিতিতেন এবং বিভিন খাতে উন্নয়ন কর্মকান্ড, অর্থ ও মুদ্রা ব্যবস্থাপনার প্রভব পড়বে। বিশেষ করে সরকারী ঋণ খাদ গুলোতে বিরাত ধাক্কা পড়বে। সুতরাং বাংলাদেশের জন্য শুধু তহবিলের প্রাপ্যতার মত একটা সহজ হিসাব নায়। বিভিন্ন ধরনের হিসাব নিকাশ রয়েছে যেমনঃ অর্থায়ন, অর্থনীতি ও রাজনীতি এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সবগুলো বিষয়ে মিলিয়ে এটা একটা বিরাট হিসাব নিকাশের প্রয়োজন রয়েছে।

বাংলাদেশ একটি আমদানি নির্ভর দেশের প্রভাব বিরাট আকার ধারন করতে পারে। বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর  নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পরতে পাড়ে। টাকার দাম বেড়ে  যেতে পাড়ে। তবে হ্যা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এ  একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে হ্যা এটাও সত্যি যে সরকার যখন নিজস্ব অর্থায়নের ঘোষণা দেয়ার পর কিছু অনাকাংখিত ইতিহাস তৈরি হয়।বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চাঁদাবাজির একটা সঠিক সুযোগ মনে করে এটাকে। তবে এই চাঁদাবাজি নিয়ে একজন মানুষ ও খুন হয় এই পদ্মা সেতু নিয়ে। তবে প্রধান মন্ত্রীকে সারাদশ থেকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে এই জন্য যে তিনি একটা সুন্দর  যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। বাংলাদেশ সরকার এই সমস্ত ঘটনা গুলো কে তিনি হালকা ও সমাধান করেছেন। বাংলাদেশ সরকার  এই সমস্ত অবিমৃষ্যকারিতা কে তিনি নিজ হাতে দমন করেছেন।

পদ্মা সেতুর যন্ত্রপাতি বা ব্যবহৃত মালামালঃ

বাংলাদেশ নয় বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা ও জটিল প্রকৃতির নদী হচ্ছে পদ্মা। খরস্রোতময় ও জটিল প্রকৃতির নদীর বুকে সেতু নির্মাণতাও তাই জটিল কাজ। তাই পদ্মা সেতুর তদারকি থেকে শুরু করে নির্মাণ কাজ দেশের এবং বিশ্বের সেরা মেধাগুলোকেই যুক্ত করার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের এতো বড় অবকাঠামো নির্মাণে অভিজ্ঞ বহু দেশের নাগরিকেরাই এ পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ করছেন। আমাদের দেশে ভারী যন্ত্রপাতি নেই। এজন্য সবগুলোই ভারী যন্ত্রপাতি এসেছে বাহিরে থেকে। কিন্তু  কিছু মালামাল দেশের তৈরি রড, সিমেন্টস।

বাংলাদেশের সেতু বিভাগ সূত্র থেকে জানায়, যে বর্তমান নদীশাসন এবং মূল সেতুর কাজে চার হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন পদ্মা সেতুর এই প্রকল্পে। তবে বাংলাদেশি কর্মী বেশির ভাগইকাজ কাজ করছেন। তবে চীনের  কর্মী আছে এক হাজারের কাছাকাছি। তবে চীন ছড়া আরো অনেক দেশের শ্রমিক কাজ করছেন তার মধ্যে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র।

ঠিকাদার ও পরামর্শকঃ

বাংলাদেশের এই প্রকল্প নির্মাণের জন্য ১৪টি দেশের প্রকৌশলীরা পরামর্শক দলে কাজ করছেন। সেই  দেশগুলো হলোঃ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন,  তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর,  নেপাল, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি ও ভারত। তবে এরা ঠিকাদারের প্রত্যেকটি কাজের মান যাচাই করে। পরামর্শক দলের বাইরে, এবং ঠিকাদার ও সেতু বিভাগের কর্মকর্তাদের বাইরে  আরেকটি ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছেন। তাদের কাজ হলো কয়েক মাস পরপর বৈঠক করে কমিটি প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্য়াল বিষয়ে সু-পরামর্শ দিয়ে থাকবেন। তাদের  প্রয়োজন মনে হলে প্রত্যেকটি কাজের ভেলু প্রধান করে থাকে। তবে বাংলাদেশের এই প্রকল্পের শুরু থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই কমিটির প্রধান ছিলেন বাংলাদেশের নাগরীক প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুর পর, বর্তমান এই কমিটির প্রধান হয়েছেন বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সাবেক  অধ্যাপক এম শামীম জে বসুনিয়া।  অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী মৃত্যুর পর এই কমিটিতে নতুন করে বিদেশের পাঁচ জন ও বাংলাদেশের ছয়জন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। বিদেশি সদস্য দেশ গুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালির  ও নেদারল্যান্ডস।

পদ্মা সেতুর চুক্তিবদ্ধ সংস্থাঃ

পদ্মা সেতু নির্মানে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয় বাংলাদেশ সরকার ও চীনা চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির সংঙ্গে ১৭ জুন ২০১৪ সালে। চীনের কোম্পানি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি নামে এই প্রতিষ্ঠানটি ১২ হাজার একশ তেত্রিশ কোটি টাকায় পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে কার্যাদেশ পায়। ২০১০ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রথম দরপত্র আহবান করা হলে সেখানে প্রি কোয়ালিফিকেশনের জন্য ৪০ টি কোম্পানি অংশ যোগ দেয়। তবে বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও এডিবির অধিনে এদের মধ্যে বাছাই করা হয় ৫ টি কোম্পানিকে। তবে পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংকের অনুরোধের কারনে একটি কোম্পানিকে বাদ দিয়ে দেয়। যখন আর্থিক প্রস্তাবের জন্য আহ্বান করলে চীনের চীনা চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানিটি শুধুমাত্র আর্থিক প্রস্তাবনা জমা দিয়ে থাকেন। ২০১৪ সালে ৭ ডিসেম্বর থেকে এই পদ্মা সেতুর  প্রকল্পের কাজ সাময়িক ভাবে শুরু হয়। সব মিলিয়ে এই সেতু্র মোট ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা (প্রায় 36600336000.00 মার্কিন ডলার)।

                            পদ্মা সেতুর নির্মাণের সময়কাল

২০১৭ সালের স্প্যাম বসানোর তারিখ

  • ৩০ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পদ্মা সেতুতে পিলারের ওপর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮নম্বর পিলারের ওপর ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে এই স্প্যান বসানো হয়।
  • ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারের ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান।
  • ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিয়ারের ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়।
  • ২৯ জুন সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়।

২০১৮ সালের স্প্যাম বসানোর তারিখ

  • জানুয়ারি মাসে জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের ষষ্ঠ শেষ স্প্যান বসে।
  • মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারের ওপর বসে সপ্তম স্প্যান।
  • ২৮ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান ৭বি সুপার স্ট্রাকচার বসানো হয়। প্রথম স্প্যান বসানোর প্রায় চার মাস পর জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে তিন হাজার ১৫০ টন ধারণ ক্ষমতার এ স্প্যান বসানো হয়।
  • মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারের ওপর বসে সপ্তম স্প্যান।

২০১৯ সালের স্প্যাম বসানোর তারিখ

  • ২০ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারের ওপর অষ্টম স্প্যান বসানো হয়।
  • ২২ মার্চ সেতুর ৩৫ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের ওপর বসে নবম স্প্যানটি।
  • ১০ এপ্রিল মাওয়া প্রান্তে ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারের ওপর দশম স্প্যান।
  • ২৩ এপ্রিল শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের ওপর ১১তম স্প্যান বসে।
  • ১৭ মে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের মাঝামাঝি স্থানে ২০ ও ২১ নম্বর পিয়ারের ওপর ১২তম স্প্যান বসানো হয়েছিল।
  • ২৫ মে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিয়ারের ওপর ১৩তম স্প্যান ৩বি বসানো হয়।
  • ২৯ জুন ১৪তম স্প্যান বসানো হয়।
  • ২২ অক্টোবর জাজিরা প্রান্তে ২৪ ও ২৫ নম্বর পিয়ারের ওপর পদ্মা সেতুর ১৫তম স্প্যান বসানো হয়েছিল।
  • ২৭ নভেম্বর মাওয়া প্রান্তে ১৬ ও ১৭ নম্বর পিয়ারের ওপর ১৬তম স্পানটি বসানো হয়।
  • ৫ ডিসেম্বর পিয়ার ২২ ও ২৩–এর ওপর মূল সেতুর ১৭তম স্প্যানটি বসানো হয়।
  • ১১ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ১৮তম স্প্যান বসানো হয়।
  • ১৮ ডিসেম্বর বসানো হয় ১৯তম স্প্যান।
  • ৩১ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারের উপরে বসানো হয় পদ্মা সেতুর ২০তম স্প্যান। ধূসর রঙের ‘৩-এফ’ নম্বরের স্প্যানটি খুঁটির উপরে বসানো হয়।

২০২০ সালের স্প্যাম বসানোর তারিখ

  • ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ২১তম স্প্যান।
  • ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তের ৫ ও ৬ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ২২তম স্প্যান।
  • ২ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৩তম স্প্যান।
  • ১১ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৪তম স্প্যান।
  • ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫তম স্প্যান বসানো হয়।
  • ১০ মার্চ পদ্মা সেতুর ২৬তম স্প্যান বসানো হয়। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় এই স্প্যান।
  • ২০ এপ্রিল ২৭তম স্প্যানটি পিয়ার-২৭ ও ২৮-এর ওপর বসানো হয়।
  • ১১ এপ্রিল জাজিরা প্রান্তে বসানো হয় ২৮তম স্প্যান।
  • ৪ মে মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৯ ও ২০তম পিয়ারের ওপর ‘৪এ’ আইডি নম্বরে সেতুর ২৯তম স্প্যান বসানো হয়।
  • ৩০ মে জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৬ ও ২৭ নম্বর পিয়ারের (খুঁটি) ওপর বসানো হয় ৩০তম স্প্যান।
  • ১০ জুন পদ্মা সেতুর ৩১তম স্প্যান বসানো হয়। সেতুর ২৫ ও ২৬ নম্বর পিয়ারে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৫-এ স্প্যান বসানো হয়।
  • ১১ অক্টোবর পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যানটি বসানো হয়। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে প্রথম দিন বসানো সম্ভব না হলেও প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় দ্বিতীয় দিনে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। বন্যা ও পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যানটি বসানো হয় চার মাস পর।
  • ২০ অক্টোবর বসানো হয় সেতুর ৩৩তম স্প্যান।
  • ২৫ অক্টোবর ৩৪তম স্প্যান বসানো হয় সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর স্প্যান ২-এ।
  • ৩১ অক্টোবর ৩৫তম স্প্যান বসানো হয় মাওয়া প্রান্তে ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান ২-বিতে।
  • ৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর ৩৬তম স্প্যান বসানো হয় সেতুর মাওয়া প্রান্তের ২ ও ৩ নম্বর পিলারের ওপর।
  • ১৩ নভেম্বর ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৯ ও ১০নং পিয়ারের ওপর বসানো হয়।
  • ২১ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১ ও ২ নম্বর খুঁটির ওপর ৩৮তম স্প্যানটি সফলভাবে বসানো হয়।
  • ২৭ নভেম্বর ৩৯ তম স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়। স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের ওপর ‘টু-ডি’ স্প্যানটি বসানো হয়।
  • ৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ৪০তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় সেতুর ছয় হাজার মিটার।
  • ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ তম পিলারে ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পুরো পদ্মা সেতু।

                          সবচেয়ে বেশি স্প্যাম বসানো হয় ২০২০ সালে মোট ২১টি।

পদ্মা সেতুর বিতর্ক ও গুজবঃ

জুলাই 2019 এ, ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েছিল যে পদ্মা সেতুর উন্নয়ন মানুষের মাথা নেবে। এর ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপরে 9 জুলাই 2019, সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানিয়েছিল যে এই ঘটনাটি গুজব এবং ভিত্তিহীন। এই ক্ষেত্রে, গবেষকরা সেতুর উন্নয়নের সমস্ত ছোট মুদ্রণ লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেতু কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছিলেন।

পদ্মা সেতু পর্যটন কেন্দ্রঃ

বাংলাদেশে বিভিন্ন যায়গায় বিভিন্ন ধরনের পর্যটিন কেন্দ্র বা দর্শেনের যায়গা রয়েছে। বর্তমান পদ্মা সেতু তার মধ্যে একটি নতুন পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে দেখা যায় দুই পারে। দুই পারে যায়গাটি মনোমুগ্ধ পরিবেশ হওয়ায় বিভিন্ন যায় গায় থেকে দেখতে আসে অনেক মানুষ।  পদ্মার দুই পাড়ের এই  অপরূপ সৌন্দর্য সব মানুষকেই মন প্রাণ আকৃষ্ট করে তুলে। পদ্মা সেতুর মেইন পয়েন্ট থেকে দারালে অর্থাৎ দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। আরো আকৃষ্ট করেছে মাওয়া-জাজিরায় পুরো সেতুর কাঠামো দাঁড় করানোর পর বহুগুণ আকর্ষণ বেড়েছে। বাংলাদেশের মানুষ সরকারি বা বেসরকারী ছুটির দিন গুলোতে স্কুল কলেজ ইউনিভারসিটির ছাত্র- ছাত্রীরা এমন কি পরিবার বন্ধ বান্ধব নিয়ে ঘুরতে যায় সেখানে। বাংলাদেশের এই প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সফলতা বিশাল গর্বের।

তাই বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতীক বিভিন্ন যায়গা থেকে এই সেতু দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন বিভিন পেশা জীবী মানুষ। এই সেতুর আশপাশে ও পদ্মার পাড়  কেউ নৌকায় চড়ে কেউ বা স্পীড বোর্ডে চড়ে মন ভরে দেখছেন সোনার বাংলাদেশের স্বপ্নের এই বৃহত্ম সেতু। অ্যাপপায়ান করার জন্য দুই পাড়ে হোটেল বা রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট হলো “হিলসা প্রোজেক্ট” দূর দূরান্ত থেকে আগত মানুষদেরকে দুই পাড়ের মানুষ আথীতিয়তার সাথে অ্যাপপায়ান করেন।

আরো পড়ুন: ঐতিহাসিক স্থাপনা তাজহাট জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য এবং  রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত ও নামকরণের ইতিহাস

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version