আফগানিস্তানের একটি মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৬ জন নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বাদাখশান প্রদেশের ফৈজাবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বিস্ফোরণটি ঘটে।

আফগানিস্তানের মসজিদে বোমা হামলা , নিহত ১৬

স্পুৎনিক টেলিগ্রাম চ্যানেলের খবরে বলা হয়েছে, বাদাখশান প্রদেশের তালেবান ডেপুটি গভর্নরের স্মরণে আয়োজনকে লক্ষ্য করে এই বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছে।

হতাহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তালেবান কর্মকর্তা রয়েছেন বলে খবর প্রকাশ পেয়েছে।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, এ সপ্তাহের শুরুতে গাড়ি বোমা হামলায় নিহত বাদাখশান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নরের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মসজিদে প্রার্থনা চলাকালে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।

জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেট এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানায় বিবিসি।

গত মঙ্গলবার অফিসে যাওয়ার সময় গাড়ি বোমা হামলার শিকার হন বাদাখশানের ভারপ্রাপ্ত তালেবান প্রাদেশিক গভর্নর নিসার আহমদ আহমদি।

আরও পড়ুনঃ উড়িয়ে দেওয়া হলো খেরসনের বাঁধ বড় বিপদের শঙ্কা রেডক্রসের

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে আইএসআইএস একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো প্রায় দুই বছরে রাশিয়ান দূতাবাস, পাকিস্তানের কূটনৈতিক মিশন এবং কাবুলের কেন্দ্রস্থলে চীনের পরিচালিত একটি হোটেলে বেশ কয়েকটি নৃশংস হামলার জন্য দায়ী।

জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেটঃ

আইএসআইএস বা আইএসআইএল সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে নিজেদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এবং আল-শাম (লেভান্ট / সিরিয়া), এই নাম নিয়ে এরা দখল করে রেখেছে উত্তর ইরাক এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় সিরিয়া। সন্ত্রাস যে এতোটা ভয়ংকর হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছে বিশ্বকে এই সন্ত্রাসদল। আবু বকর আল-বাগদাদী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আইএস বা ইসলামিক স্টেটের বর্বরতা এতোটাই জঘন্য যে তাদের এসব কর্মকাণ্ডকে ঘৃণ্য হিসেবে নিন্দা করেছে আল কায়দা নামক আরেকটি সন্ত্রাসী দল। ২০১৬সালে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকায়, গুলশান হলি আর্টিসান বেকারিতে সংগঠিত সবচেয়ে ভয়বহ জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে এই হামলায় তিন বাংলাদেশি,এক ভারতীয়,নয় ইতালীয় এবং সাত জাপানি নাগরিক নিহত হন। এছাড়াও দুজন পুলিশ এই হামলায় জিম্মিদেরকে উদ্ধার করতে যেয়ে নিহত হয়।

আরও পড়ুনঃ পি এস জি অধ্যায় শেষ করে, মেসি যোগ দিচ্ছেন ইন্টার মিয়ামি তে

তালেবানঃ

তালেবান আফগানিস্তান ভিত্তিক সুন্নী ইসলামী মৌলবাদী এবং পশতুনদের একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এরা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন অবস্থায় তাদের কর্মকাণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এবং ২০০১ সালে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স এবং ন্যাটো দেশগুলো কর্তৃক পরিচালিত এক যৌথ অভিযানের মাধ্যমে সেদেশে তালেবান শাসনের অবসান ঘটানো হয়। এসময় বহু তালেবান নেতা নিহত হয় এবং অনেকেই পালিয়ে যায়। জীবিতাবস্থায় পালানো এসব নেতারাই পরে ভয়ংকর বিশ্বত্রাস তালেবান নামক সন্ত্রাসী দলগড়ে তোলে। এই দলটির প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বার্ষিক আয় আছে যা চাঁদাবাজি, মানব পাচার, ড্রাগ ট্র্যাফিকিং ইত্যাদি থেকে আসে। নারী ধর্ষণ, নারীকে যৌন দাসীরূপে ব্যবহার, শিশু সৈন্য নিয়োগের মতো নিকৃষ্টতাই এই দলের ধর্ম। মোল্লা মুহাম্মাদ উমারের নেতৃত্বে এই দল গঠিত হয় এবং নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ১১ সেপ্টেম্বরের ৯/১১ হামলাটি তালেবানদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম হলো এই তালেবান সন্ত্রাসবাদী দল।

আরও খবরঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *