আজকে আলোচনা করবো জন্ডিসের চিকিৎসা নিয়ে। জন্ডিস হলো ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা নাম অকেই হয়তো আমরা জানিনা। তবে এর বাংলা শব্দ হলো ন্যাবা কমলা। এটি কামেলা হলুদ রোগও বলা হয়। এই রোগ বহুল প্রচলিত, প্রায় ছোট বড় সবাই অন্তত নাম শোনে থাকে কমবেশি ।
এটি যকৃতের পিত্ত নিঃসরণ ক্রিয়ার স্বল্পতা অথবা অবরুদ্ধতাবশত রক্তের পিত্ত মিশ্রিত হয়ে শারীরিক রক্তের মধ্যে সঞ্চালিত হয়ে শরীরস্থ চর্মে, মূত্র , চোখের শ্বেত বর্ণ স্থান, পীত বর্ণ ও হলদে বা কমলা রঙের হলে ন্যাবা বা জন্ডিস বলে। এই রোগটি নারী, পুরুষ, শিশু সবারই হতে পারে। জন্ডিস শতকরা ৬০ ভাগ শিশুর জন্মের পর হয়ে থাকে।
জন্ডিসের লক্ষণ
যেভাবে বুঝবেন জন্ডিস হয়েছে : যেসব লোকের এই রোগটি হয় ক্ষুধাহীনতা দেখা দিবে, এর পর খাদ্যে অরুচি বিরাজ করে। বমি বমি ভাব হয়, বমি হতে পারে বা বমি হয়, অনেক সময় পিত্ত বমি হয়, রোগীর মুখে তিক্ত স্বাদ অনুভব করে তখন কোন কিছু খায়তে পারে না।
গায়ে জ্বর ভাব বা জ্বর থাকে, পেটের ডান দিকে বা বাম দিকে বেদনার অনুভব হয়, অনেক সময় চোখের সাদা অংশ হলুদ ভাব হয়। আবার না হতে পারে, গায়ের রঙ হলুদ বর্ণ, জামা-কাপড় অথবা বিছানায় এই ঘাম লাগলে তাও হলুদ দেখায়, রক্ত স্বল্পতার ভাব থাকে, আবার রক্তে বিলোরবিনের মাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব হলুদ হয়।
কখনো কখনো প্রস্রাব সরিষার তেলের মতো হয়, শিশুদের ক্ষেত্রে, শিশুরা বুকের দুধ পান ছেড়ে দেয়, শরীর দিন দিন দুর্বল হতে থাকে, অন্যান্য লক্ষণগুলোর সাথে আর একটি পরীক্ষ করে নিবেন তা হলো শিশুর কপালে আঙুল দিয়ে আলতোভাবে চাপ দিয়ে কিছু ক্ষণ পর উঠিয়ে নিন। যদি আপনার আঙুল উঠানোর পরে স্কিন হলদে দেখায় তবে বুঝতে হবে জন্ডিস হয়েছে। আর এই ভাবে জন্ডিসের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায়।
জন্ডিসের চিকিৎসা
চিকিৎসা: এই রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিতে রোগীর চিকিৎসা করা অত্নান্ত ভালো। তাই কোন চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে লক্ষণ সংগ্রহ করে। রোগের লক্ষণ মিলিয়ে সঠিক ওষুধ, শক্তি, মাত্রা নির্ধারণ করে রোগীকে দিতে হয়, যা একজন ভালো চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব। এতে করে জন্ডিস সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য হয়। হোমিওপ্যাথিতে সচরাচর যেসব ওষুধগুলো ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো : চায়না, চেলিডুনিয়াম, একোনাইট, ব্রায়ুনিয়া, কার্ডোয়াস ম্যাজ, কারিকা পেপায়া, লাইকোপুড়িয়াম, মাইরিকা, সালফার, নেট্রাস সালফ, নাক্স ইত্যাদি।
জন্ডিসের পথ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা: আপনি যা করবে না। ১)অত্যধিক তাপে থাকবে না, ২)স্বাস্থ্য বিধির লঙ্ঘন, ৩)কঠিন রোদে, ৪)কঠোর পরিশ্রম, ৫)উগ্র মসলাযুক্ত খাবার, ৬)ভাজা-পোড়া, ৭) তৈলাক্ত খাবার, ৮)বাসি-পচা খাবার, ৯)ঝাল-কঠিন টক একদম খাবেন না।
জন্ডিস রোগোর করনীয়
এই রোগটি হলে যা করবেন তা হলো- ভাইরাল হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে যঠেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম নেয়া সেই সাথে চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে হেপাটাইটিসের রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে। এই ভাইরাল হেপাটাইটিস সাধারণত ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণরুপে সেরে যায়।
এই সময় ব্যথার ওষুধ যেমন, এসপিরিন, প্যারাসিটামল ঘুমের ওষুধসহ অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। এমনকি মরফিন কিংবা ঘুমের ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। আর যারা অ্যালকোহলে আসক্তরা অবশ্যই অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে নতুবা বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। জন্ডিস হলে অবশ্যই ভালো কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধই সেবন করা ঠিক হবে না।
বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নেওয়া, ভালো পানি পান করা। বাংলাদেশের ঢাকা শহরবাসীর একমাত্র ভালো বা বিশুদ্ধ পানি হলো ঘরে ফোটানো পানি। এছাড়া অন্য কোনো পানিই জীবাণুমুক্ত নয়। যে সব খাবার খেতে হবে জন্ডিস রোগীদের যেমন- তাজা ফল, বেল, আখের রস, ডাবের পানি, গ্লুকোজের পানি, এই সব খাবার গুলো বেশি বেশি করে খাবেন।
জটিলতা: এই রোগটি একটি জটিল রোগ যদি কাহারো হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। এই ব্যাপারে সামান্যতম সময় ব্যয় করা আপনার জন্য সমীচীন নয়। আর এই রোগটি হলে যে সব ঝুকি হতে পারে তা নিচে বলা হলোঃ ১) জন্ডিস থেকে লিভার সিরোসিস হতে পারে, ২) জন্ডিসের ফলে লিভার ফোড়া হতে পারে, ৩) দীর্ঘ দিন ভুগলে লিভার ক্যান্সার হতে পারে, ৪) শেষ পরিণতি মৃত্যুও হতে পারে।
আমরা জানি লিভার দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আর এই লিভার (যকৃৎ) প্রাণীদেহের বিপাকে কাজ করে। তবে এ ছাড়া এটি শরীরের বিভিন্ন কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে লিভারের ওজন প্রায় এক দশমিক ৫০ কেজি। সাধারণত মানুষের দুই ধরণের কোষ দিয়ে লিভার গঠিত হয়। এগুলো হলো প্যারেনকাইমাল ও নন-প্যারেনকাইমাল।
ত্বথ্য অনুসারে সারা বিশ্বে প্রায় এক লাখ মানুষ প্রতিবছর লিভারের রোগে মারা যায়। আর লিভারের যে রোগগুলো সাধারণত হয়, সেগুলো হলো: লিভার সিরোসিস, ভাইরাল হেপাটাইটিস (জন্ডিস), লিভারের ফোঁড়া, পিত্তথলির বা পিত্তনালির রোগ, ফ্যাটি লিভার, লিভার ক্যানসার ইত্যাদি। তাই লিভারের বিভিন্ন রোগ ভেদে আমরা কী খাব আর কী খাব না তা জেনে নেওয়া জরুরি। আজ আমরা রংপুর মিডিয়া অনলাইন পাঠকদের জন্য সে বিষয়ে আলোচনা করব।
ডাক্তারি পরিভাষায় জন্ডিস নিজে কোন রোগ নয়, বরং এটি রোগের লক্ষণ। এই জন্ডিস লিভারের সমস্যা ছাড়াও রক্তের রোগ কিংবা পিত্তের স্বাভাবিক প্রবাহ পাথর, ক্যান্সার কিংবা অন্য কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলেও জন্ডিস হতে পারে। তবে জন্ডিস বলতে সাধারণত আমরা লিভারের একিউট প্রদাহ বা একিউট হেপাটাইটিস জনিত জন্ডিসকেই বুঝে থাকি। আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে, ভাইরাস থেকে শুরু করে নানা ধরণের ওষুধ, এলকোহল ইত্যাদি অনেক কারণেই লিভারে একিউট হেপাটাইটিস হতে পারে। প্রসঙ্গত প্যারাসিটামল কিংবা টিবি(যক্ষ্মা) রোগের ওষুধের কথা বলা যায়।
কিন্তু আমাদের দেশে একিউট হেপাটাইটিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস ই, এ এবং বি ভাইরাস। সি সব গুলোর মধ্যে পানি ও খাদ্যবাহিত আর তৃতীয়টি ছড়ায় মূলত রক্তের মাধ্যমে। এই হেপাটাইটিস এ ভাইরাস প্রধানত যে কোন শিশুদের জন্ডিসের কারণ, আবার যে কোন বয়সের মানুষই হেপাটাইটিস ই ও বি ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
বাংলাদেশের মানুষের প্রথাগত বিশ্বাস হচ্ছে জন্ডিস হলেই বেশি বেশি পানি খেতে হবে। আরো খেতে হবে বেশি করে আখের রস, ডাবের পানি এবং গ্লুকোজের সরবত ইত্যাদিও। কিন্তু ব্যাপারটি এরকম নয়। সাধারণ মানুষের মতোই জন্ডিস রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। কিন্তু সমস্যা হতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে কম পানি খেলে, কারণ সে ক্ষেত্রে একিউট কিডনি ইনজুরি বা কিডনি ফেইলিওর দেখা দিতে পারে। জন্ডিসের রোগীরা অনেক সময়েই বমি বা বমি-বমি ভাব এবং খাবারে অরুচির কারণে যথেষ্ট পরিমাণে পানি এবং অন্যান্য খাবার খেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে রোগীকে শিরায় স্যালাইন দেয়া জরুরি।
এই জন্ডিস হলে বেশি বেশি পানি বা তরল খেলে প্রস্রাবের রং অনেকটাই হালকা বা সাদা হয়ে আসে বলে জন্ডিসের রোগীরা প্রায় বেশি বেশি তরল খাবার খেয়ে থাকেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে যে, এতে জন্ডিস কিন্তু এতটুকুও কমে না।
ধরা যাক এক বালতি এবং এক গ্লাস পানিতে এক চামচ করে হলুদ রং গুলিয়ে দেয়া হলো। গ্লাসের চেয়ে বালতির পানি অনেক কম হলুদ দেখালেও আসলে কিন্তু গ্লাস আর বালতি দুটোতেই হলুদ রঙের পরিমাণ সমান। তেমনি বেশি বেশি পানি খেলে ঘন-ঘন প্রসাব হয় বলে তা কিছুটা হালকা হয়ে এলেও রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ এতে বিন্দুমাত্রও কমে না।
সুতরাং জন্ডিস রোগীর প্রধান সমস্যা বিশ্রাম, আর যদি সেখানে প্রস্রাব করার জন্য বারবার টয়লেটে যেতে হলে রোগীর বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটে,এতে করে রোগীর জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়। অনুরুপভাবে বেশি বেশি ফলের রস খাওয়াও বুদ্ধিমানোচিত হবে না।
এতেও করে একই কারণে রোগীর বিশ্রামের ব্যাঘাত ঘটে। এর পাশাপাশি বেশি বেশি ফলের রস খেলে পেটের মধ্যে ফার্মেন্টেশনের কারণে রোগীর পেট ফাপা এবং খাওয়ায় অরুচি ইত্যাদি বেড়ে যায়। আর কেউ যদি সকাল বেলার পারা পাকা তাল সারাদিন ফেলে রেখে বিকেলে সেটি ভালোভাবে খেলে, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও এর হাতে হাতে প্রমাণ পাবে।
আমরা সকলেই জানি যে জন্ডিসের রোগীর এমনিতেই তার রোগের কারণে খাওয়ায় অরুচি, বমি বা বমিভাব এসব থাকতে পারে। এর সাথে যদি এই উটকো ঝামেলা যোগ হয়ন। এতে করে যে রোগীর স্বাভাবিক খাবার ও পানি গ্রহণ সমস্যা দেখা দিবে, এতে বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আমাদের দেশে আখের রস জন্ডিসের একটি বহুল প্রচলিত ওষুধ। অথচ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে রাস্তার পাশের যে দুষিত পানিতে আখ ভিজিয়ে রাখা হয় সেই পানি থেকেই অনেক সময় আখের রসে এবং এমনকি ঐ রস থেকে হেপাটাইটিস ভাইরাস এ বা ই মানব দেহে সংক্রমন হতে পারে।
এমন আরেকটি আমাদের দেশে প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে জন্ডিসের রোগীকে হলুদ দিয়ে রান্না করা তরকারি খেতে দেয়া যাবে না কারণ এতে রোগীর জন্ডিস বাড়তে পারে। ডাক্তারি ভাষায় রক্তে বিলিরুবিন নামক একধরনের একটি হলুদ পিগমেন্টের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণেই মানুষের দেহে জন্ডিস দেখা দেয়। কিন্তু বিশেষ করে এর সাথে খাবারের হলুদের কোন ধরনের যোগাযোগ নেই।
আবার একইভাবে জন্ডিসের রোগীকে তেল-মসলা না দিয়ে শুধুমাত্র সিদ্ধ খাবার খেতে দেয়ারও কোন যুক্তি থাকতে পারে না। বিশেষ করে এ সমস্ত রোগীদের এমনিতেই খাবারে অরুচি দেখা দেয়। যদি তার উপর এ ধরনের খাবার-দাবার রোগীদের উপকারের চেয়ে অপকারই করে বেশি। বিশেষ করে জন্ডিসের রোগীকে সবসময় এমন খাবার দেয়া উচিত যা তার জন্য রুচিকর, যা তিনি খেতে পারছেন।
আমাদের কিন্তু বিশেষ করে মনে রাখতে হবে বাইরের খাবার সব সময় পরিহার করা উচিত নতুবা মারাক্ত ক্ষতি হতে পারে। ভালো ভাবে সাবধান থাকতে হবে পানির ব্যাপারে। তবে আর একটি কথা ভালোভাবে মনে রাখতে হবে জন্ডিস থাক বা না থাক, না ফুটিয়ে পানি কখনোই খাওয়া উচিত নয়। যদি বাইরের খাবার যদি নেহাৎ খেতেই হয় তবে তা অবশ্যই গরম খাওয়া উচিত । এবং তার সাথে জরুলী সতর্ক থাকা উচিত ফুচকা বা চটপটি এবং বোরহানি আর সালাদের ব্যাপারে।
কারণ হেপাটাইটিস এর মতো পানিবাহিত ভাইরাসগুলো এসবের মাধ্যমেই ছড়িয়ে থাকে। আর বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের খুব সাবধান থাকা উচিত। এ সময় মায়েরা প্রায়শই বাইরের খাবার, এটা-সেটা খেয়ে থাকেন যা থেকে তারা অনেক সময়ই এই হেপাটাইটিস ই ভাইরাস জনিত জন্ডিসে আক্রান্ত হন। আর এই গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে যদি হেপাটাইটিস ই হয়, কিন্তু তা থেকে মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা শতকরা পঞ্চাশ ভাগেরও বেশি।
আরও পড়ুনঃ দাঁত ব্যথা কমানোর ৩ টি প্রাকৃতিক উপায়
আর জন্ডিসের রোগীদের সাথে একই প্লেট-বাসন বা গ্লাসে খাবার বা পানি খাওয়া যাবে কিনা এটি জন্ডিস রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের একটি বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে যে সমস্ত ভাইরাসের মাধ্যমে একিউট হেপাটাইটিস জনিত জন্ডিস হতে পারে, তাদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি ও সি রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আর যদিও হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাস দুটি খাদ্য ও পানিবাহিত হলেও, এই দুটি ভাইরাসের কারণে রোগীর যতদিনে জন্ডিস দেখা দেয়, তখন তার কাছ থেকে আর ঐ ভাইরাস দুটি ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। অতএব জন্ডিস রোগীর সাথে প্লেট-বাসন শেয়ার করার মাধ্যমে কারও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নেই।
অনুরুপ জন্ডিস রোগে আক্রান্ত মা নিশ্চিন্তে তার সন্তানকে দুধ পান করাতে পারেন তবে মার যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস জনিত জন্ডিস হয়ে থাকে তবে শিশুর জন্মের সাথে সাথেই হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা এবং ইমিউনোগ্লোবুলিন ইঞ্জেকশন দেয়া অত্যন্ত জরুরি। এর কারণ মায়ের দুধের মাধ্যমে না ছড়ালেও, মার ঘনিষ্ট সাহচর্যে শিশুর হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা থাকে এবং আমাদের দেশে অনেক হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে মানুষ এভাবেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কিন্তু আমাদের এই সব বিষয় গুলো ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হতে যাতে এই রোগটি আমাদের আক্রাত না করতে পারে।
জন্ডিস রোগীর খাবার তালিকা
ডাক্তারি পরিভাষায় জন্ডি সরোগীদের খাবার ব্যাপারে উল্লেখ্যযোগ্য কোন বিধিনষেধ নেই। কিন্তু সহজেই হজম যোগ্য সরল শর্করার্করা যেমন- ভাত, জাউভাত, রুটি ইত্যাদি বেশি খাওয়া উঁচিত। এছাড়া পানি এবং তরল জা তীয় খাবার প্রয়োজনীয় পরিমাণ খেতে পারলে ভাল হয় যেমন- ডাবের, শরবত, পানি, আঁখআঁ বা আখের রস, গ্লুকোজের শরবত ইত্যাদি। তবে হেপাটাইটিস হলে যেহেতু লি ভারের স্বা ভাবিক কর্য কারিতা কিছুটা হলেও বাঁধাবাঁধাগ্রস্ত হয় তাই লিভার বা পিত্তথলির উপর চাপ সৃষ্টিসৃষ্টি করে এই ধরণর খাবার এড়ি য়ে চলা উচিৎ যেমন- জন্ডিসের লক্ষণ গুলো কি কি? রোগীর খাবার তালিকা ও চিকিৎসা সহ বিস্তারিত! চর্বি জার্বি জাতীয় খাবার, ঘি, মাখন, ফাস্টফুড বা বাইরের ভাঁজাপোড়া টাইপের খাবার, কোমল পানীয়, গরু বা খাসির মাংস ইত্যাদি।
জন্ডিস টেস্ট
সাধারণত জন্ডিস নির্ণয় করা হয় রক্তে বিলিরুবিনের পরিমান পরীক্ষার মাধ্যমে। গবেষণা দেখা গিয়েছে যে একজন সুস্থ্য মানুষের রক্তে বিলিরুবিনের স্বাভাবিক মাত্রা 1.2 mg/dL এর নিচে থাকে। তাছাড়া রক্ত পরীক্ষার মাধ্যেমে লিভর ফাংশন এর কার্য কারিতা ও নির্ণয় করা সম্ভব। যদিও এরপর রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে জন্ডিসের সঠিক কারণ অনুসন্ধান করার জন্য ডাক্তার আরো কিছু পরীক্ষা করাতে পারেন যেমন- রক্তে আর সিবিসি, পেটের আলট্রাসাউন্ড, লিভার বায়োপসি ইত্যাদি।
জন্ডিস কত দিনে ভালো হয়?
দেখা যায় সাধারণত ৭ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে লিরুবিনর মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং জন্ডিস অনেক সময় এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। তবে এটি একটি গড় হিসাব, আর যদি রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং সংক্রমণের মাত্রার উপর ভিত্তি করে এর চেয়ে সময় কম বা বেশি লাগতে পারে।
বিশেষ পরামর্শ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অবহেলা এবং অসচে তনতার কারণে অনেক সময় জন্ডিস মারাত্বক আকার ধারণ করে এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তাই জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিলে পূর্ণ পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিন, ডাক্তারের পরামর্শ অর্নুযায়ী প্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যাবস্থা করুন। আর বিশেষ করে খাবার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। সুস্থ্য থাকুন, ভাল থাকুন।