বিপর্যয়ে বাংলাদেশ, বৃষ্টিতে আবার বন্ধ খেলা তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে বোলিং নিয়েছে আফগানিস্তান। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৩৪.৩ ওভারে ১৪৪/৭
বৃষ্টিতে খেলা আবার বন্ধ
সরানো হচ্ছে কাভার
খেলা বন্ধ হওয়ার পর পেরিয়ে গেছে এক ঘণ্টা। এর মধ্যে বৃষ্টির বেগ কমেছে ও বেড়েছে কয়েক দফায়। কাভার সরানো শুরুর করার পর আবার নেমেছে বৃষ্টি। অবশেষে এখন আবার থেমেছে বৃষ্টি। সরানো হচ্ছে কাভার।
আবার বৃষ্টির হানা আরেক দফা বৃষ্টিতে থমকে গেল খেলা। যদিও রোদও আছে বেশ!
রোদের মধ্যেই নামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আম্পায়াররা তুলে নেন বেলস। ৩৪.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৭ উইকেটে ১৪৩।
৫৭ বলে ৪২ রানে খেলছেন হৃদয়, ১ রানে তাসকিন।
আগের দফায় বৃষ্টিতে ৫০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকলেও ওভার কাটা পড়েনি। এবার শঙ্কা আছে ওভার কমে যাওয়ার।
পারলেন না মিরাজও
আফিফ হোসেনের বিদায়ের পর গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয়ের আরেক নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও পারলেন না দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।
আকাশ আবার ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যেতে দেখেই কি না, ফজলহর ফারুকিকে আক্রমণে ফেরান আফগান অধিনায়ক। ফেরার ওভারেই দলকে উইকেট এনে দেন এই পেসার।
রাউন্ড দা উইকেটে করা লেংথ বল অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকে। মিরাজ চেষ্টা করেন পুল করতে। কিন্তু পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। বল লাগে পায়ে। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তোলেন আম্পায়ার।
মিরাজ রক্ষা পাননি রিভিউ নিয়ে। উল্টো হারাতে হয় রিভিউ।
২৩ বলে ৫ রান করে আউট হলেন মিরাজ। হৃদয়কে সঙ্গ দিতে পারছেন না কেউ। তিনি খেলছেন ৪১ রানে।
নতুন ব্যাটসম্যান তাসকিন আহমেদ।
রিভিউয়ে সফল রশিদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না আফিফ হোসেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না আফিফ হোসেন। দলে ফেরার ম্যাচে শুরু থেকেই বেশ ছটফট করছিলেন আফিফ হোসেন। শেষ পর্যন্ত বড় কিছু করতেও পারলেন না তিনি। রশিদ খানের বলে রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরাল আফগানিস্তান।
লেংথ বলটিতে শুরুতে একটু সামনে গিয়ে পরে পেছনের পায়ে ফ্লিক করার ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নেন আফিফ। কিন্তু বল পিচ করে টার্ন না করে সোজা গিয়ে আঘাত করে আফিফের স্টাম্পে। আম্পায়ার আড্রিয়ান হোল্ডস্টক আউট দেননি, তবে রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানরা।
গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দলেল বিপর্যয়ের মধ্যে ৯৩ রানে অসাধারণ অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন আফিফ। এবার তিনি ৮ বলে ৪ রান করে আউট হলেন দলকে আরও বিপর্যয়ে ঠেলে। বাংলাদেশের রান ২৭.২ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৮। নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৫ রানে খেলছেন হৃদয়।
রশিদের গুগলিতে মুশফিকের বিদায় । রশিদ খানের গুগলিতে বোল্ড হয়ে ফিরছেন মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম। রশিদ খানের গুগলিতে বোল্ড হয়ে ফিরছেন মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম। সাকিবের উইকেটের রেশ থাকতেই আরেকটি বড় ধাক্কা। এবার বিদায় নিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও।
রশিদ খানের ওই ওভারে বিপজ্জনকভাবে নিচু হয়ে যাওয়া একটি বল কোনোরকমে ঠেকান মুশফিক। তবে পারেনি দুই বল পর। রশিদ এবার করেন গুগলি। বল যদিও ছিল অনেকটা শর্ট, তবে জোরের ওপর করা ডেলিভারিতে গতি ছিল বেশ। পুল শটের চেষ্টায় মুশফিক মিস করেন পুরোপুরি। বল তার পায়ে লেগে ছোবল দেয় স্টাম্পে।
৩ বলে ১ রান করেই ফিরলেন মুশফিক। রশিদ খান পেলেন প্রথম শিকারের দেখা। বাংলাদেশে রান ২৩.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১১২। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ক্রিজে আছেন আফিফ হোসেন।
নবির শিকার সাকিব মোহাম্মদ নবির দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন সাকিব আল হাসান মোহাম্মদ নবির দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন সাকিব আল হাসান। বোলার ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমারজাই, তবে মোহাম্মদ নবি যে ক্যাচটি নিলেন, তাতে উইকেটের কৃতিত্ব ফিল্ডারকে দেওয়াই যায়!
চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে একটুও সাবলীল ছিলেন না সাকিব আল হাসান। টাইমিং ঠিকমতো করতে পারছিলেন না, ভুগছিলেন গ্যাপ খুঁজে পেতে। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েও যেতে পারলেন না তিনি।
ওমারজাইয়ের ফুল লেংথ বলটিতে ড্রাইভ করেন সাকিব। কিন্তু বল মাটিতে রাখতে পারেনি। শর্ট কাভার ফিল্ডারের কাছে যেতে যেতে অবশ্য প্রায় মাটি স্পর্শ করেই ফেলছিল বল। কিন্তু দারুণ ক্ষীপ্রতায় ঝাঁপিয়ে নিচু হয়ে যাওয়া বল মুঠোয় জমান ৩৮ বছর বয়সী নবি। ৩৫ বলে ১৪ রান করে বিদায় নিলেন সাকিব। বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১০৯।
বাংলাদেশের একশ: বৃষ্টির পর সতর্কতায় ব্যাট করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। ২০.২ ওভারে দলের রান স্পর্শ করেছেন ১০০।
হৃদয়ের রক্ষা জীবন পাওয়ার পর দলকে টানছেন তাওহিদ হৃদয়। জীবন পাওয়ার পর দলকে টানছেন তাওহিদ হৃদয়। নীরিহ একটি ডেলিভারিতে উইকেট হারাতে বসেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তবে ক্যাচ নিতে পারেননি আফগান কিপার রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
২০তম ওভারে মুজিব উর রহমানের লেংথ বলটি লেগ স্টাম্পে পিচ করে আরও বেরিয়ে যায় বাইরে। পুল করার চেষ্টায় হৃদয় পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। উইকেটের পেছনে বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি গুরবাজ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল স্পর্শ করেছিল হৃদয়ের গ্লাভসে।
তখন ১৬ রানে খেলছিলেন হৃদয়।
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু বৃষ্টির পর ব্যাটিং শুরু করেছেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। বৃষ্টির পর ব্যাটিং শুরু করেছেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। বৃষ্টিতে ৫০ মিনিট বন্ধ থাকার পর শুরু হলো খেলা। কোনো ওভার কাটা পড়েনি। বাংলাদেশের ইনিংস মেরামত করার লড়াই শুরু করলেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। ১৫.১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৮৪। ১২ বলে ৪ রানে খেলছেন সাকিব, ৯ বলে ৮ রানে হৃদয়।
আর পড়ুন: পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় হতে যাচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ
থেমেছে বৃষ্টি
বৃষ্টি থেমে গেছে। চট্টগ্রামের আকাশে কালো মেঘের আনাগোনাও কম এখন। আকাশ অনেকটাই পরিষ্কার। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের উইকেটের কাভার সরানো হয়েছে। মাঠ শুকানোর কাজ চলছে। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। কোনো ওভার কাটা পড়েনি।
বৃ্ষ্টির হানা
বেশ কিছুক্ষণ ধরেই কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিল আকাশ। চারপাশ কালো হয়ে যায় অনেকটাই। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ফ্লাড লাইট। এক পর্যায়ে বৃষ্টি নামে গুঁড়ি গুঁড়ি। খেলা বন্ধ করে দেন আম্পায়াররা। একটু পরে বৃষ্টির বেগ বাড়ে আরও।
বোলিংয়ে এসেই নবির উইকেট ছন্দে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত টিকলেন না বেশিক্ষণ। ছন্দে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত টিকলেন না বেশিক্ষণ। মোহাম্মদ নবির প্রথম বলেই সুইপ করার সিদ্ধান্ত নিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ডেকে আনলেন নিজের পতনও।
দ্বাদশ ওভারে মুজিবের বলে লিটনের বিদায়ের পর ত্রয়োদশ ওভারে নবিকে আক্রমণে আনেন আফগান অধিনায়ক। তা কাজে লেগে যায় শুরুতেই। নবির লেগ স্টাম্পে থাকা বল হাঁটু নামিয়ে সুইপ করতে যান শান্ত। এক মুহূর্তের জন্য সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন বলেও মনে হয়। বলটিও ঠিক সুইপের জন্য আদর্শ ছিল না। ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় শর্ট ফাইন লেগে। ১৬ বলে ১২ রান করে আউট শান্ত। ৩৮ বছর বয়সী নবি উইকেট নিলেন প্রথম বলেই। বাংলাদেশের রান ১২.১ ওভারে ৩ উইকেটে ৭২।
নতুন ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়। হতাশায় বিদায় লিটনের আলগা বলে বাজে শটে আউট হলেন লিটন দাস। আলগা বলে বাজে শটে আউট হলেন লিটন দাস। আউট হয়ে বেশ অনেকটা সময় ক্রিজেই দাঁড়িয়ে রইলেন লিটন কুমার দাস। মাঠই ছাড়তে চাচ্ছিলেন না তিনি। হতাশ হচ্ছিলেন হয়তো নিজের ওপরই। আউটের ধরনটিই যে অমন!
লেগ স্টাম্পে শর্ট ডেলিভারি করেন মুজিব উর রহমান। বল দেখেই হয়তো চোখ চকচক করে ওঠে লিটনের। বড় শটের আদর্শ ডেলিভারি! কিন্তু বল হয়তো পিচ করে একটু থমকে আসে, কিংবা অতি জোরে মারার চেষ্টায় লিটন গড়বড় করে বসেন টাইমিংয়ে। মারে তাই জোর হয়নি একদম। স্কয়ার লেগ সীমানা থেকে অনেকটা ভেতরেই সহজ ক্যাচ নেন রহমত শাহ। ৩৫ বলে ২৬ রান করে ফিরলেন লিটন। ১১.২ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৬৫। নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
আর পড়ুন: ২০২৪ সালের বিপিএল শুরু হবে জাতীয় নির্বাচনের পরে
বাংলাদেশের পঞ্চাশ
একাদশ ওভারে সালিম সাফির ওয়াইড থেকে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করল পঞ্চাশ। ওই ওভারেই দুটি শর্ট বল পেয়ে দারুণভাবে কাজে লাগালেন লিটন কুমার দাস। একটিতে ‘নো’ বলে চার মারলেন পুল করে, আরেকটি পুল শটেই ছক্কা। ম্যাচের প্রথম ছয় সেটি।
একই গতিতে ১০ ওভার
নাজমুল হোসেন শান্ত ক্রিজে যাওয়ার পরপরই দুটি চার মেরেছেন দারুণ শটে। তবে লিটন দাস এগোচ্ছেন আগের মতোই সাবধানী ব্যাটিংয়ে। ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৪৮।
প্রথম ৫ ওভারে রান আসে ২৪, পরের ৫ ওভারেও ২৪।
জীবন পেলেন শান্ত
প্রথম ওভারেই উইকেট নিতে পারতেন মুজিব উর রহমান। কিন্তু সুযোগটি হারালেন তিনি নিজেই। নাজমুল হোসেন শান্ত রক্ষা পেলেন ১০ রানে।
ইনিংসে সেটি দশম ওভারের পঞ্চম বল। অনেকটা খাটো লেংথের বলটি পিচ করে একটু টার্ন করে বাইরে যাচ্ছিল বাঁহাতি শান্তর জন্য। তিনি চেষ্টা করেন সোজা ব্যাটে পুল করার। কিন্তু টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। বল যায় ছুটে যায় বোলারের দিকেই। সহজ সুযোগ নয়, কিন্তু খুব কঠিনও নয়। কিন্তু নন স্ট্রাইক প্রান্তের ব্যাটসম্যানের লিটন দাসের শরীরের ওপর থেকে ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেনি মুজিব। বল তার হাতে ছোবল দিয়ে ছিটকে যায় মিড অনের দিকে।
আবার ফারুকির শিকার তামিম তামিম ইকবালকে কট বিহাইন্ড করে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন ফজলহক ফারুকি।
তামিম ইকবালকে কট বিহাইন্ড করে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন ফজলহক ফারুকি।
গত বছর দুই দলের লড়াইয়ে তামিম ইকবালের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিলেন ফজলহক ফারুকি। এবারও বাংলাদেশের অধিনায়ককে ফিরিয়েই সিরিজ শুরু করলেন আফগান বাঁহাতি পেসার।
গত বছরের ওই সিরিজের ফারুকির ফুল লেংথ বল ভুগিয়েছে তামিমকে। এবার ব্যতিক্রম। অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ বলটি মুভ করেনি খুব একটা। তামিম জায়গায় দাঁড়িয়ে গ্লাইড করার চেষ্টা করেন থার্ডম্যানে। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় কিপারের কাছে।
২১ বলে ১৩ রান করে বিদায় নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলের রান ৬.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৩০। নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত।
শুরুতে সাবধানী দুই ওপেনার
সবুজ ঘাসের উইকেটে শুরুতে সাবধানী ব্যাটিং করছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। সবুজ ঘাসের উইকেটে শুরুতে সাবধানী ব্যাটিং করছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। টসের সময় যেমনটি বলেছিলেন তামিম ইকবাল, বাংলাদেশ শুরুটা করেছে সেভাবেই। সবুজ ঘাসের উইকেটে দুই ওপেনার তামিম ও লিটন কুমার দাস সতর্ক ব্যাটিংয়ে চেষ্টা করছেন দলকে নিরাপদে রাখতে।
৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৪। তামিম খেলছেন ১৬ বলে ৯ রান নিয়ে, লিটনের রান ১৪ বলে ৩।
বাংলাদেশের রান তবু এত বেশি আফগান বোলারদের সৌজন্যে। অতিরিক্ত থেকে ৫ ওভারে এসেছে ১২ রান। এর মধ্যে ওয়াইড থেকেই এসেছে ১১।
সালিমের এলোমেলো শুরু
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ হয়তো শুরুতেই পেয়ে বসল মোহাম্মদ সালিম সাফিকে। প্রথম বলটি তিনি করলেন লেগ স্টাম্পের বাইরে। কিপার তা ধরতে পারলেন না। ওয়াইডসহ ৫ রান। পরের বলটি তিনি করলেন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। আবারও ওয়াইড।
এরপর তার প্রথম বৈধ ডেলিভারিতে দারুণ ড্রাইভে বাউন্ডারিতে পাঠালেন তামিম ইকবাল। পরের বলে আবারও ওয়াইড। এক বল পর ওয়াইড আরেকটি। এরপর অবশ্য স্নায়ুকে একটু সামলে নিয়ে ভালোভাবে ওভার শেষ করলেন সালিম। ২০ বছর বয়সী পেসারের প্রথম ওভার থেকে রান এলো ১৩।
সালিমের অভিষেক আফগানিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হচ্ছে মোহাম্মদ সালিম সাফির। সিরিজ শুরুর আগের দিন ২০ বছর বয়সী এই পেসারকে নিয়ে অনেক আশার কথা শুনিয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক শাহিদি। এখনও পর্যন্ত ১৫ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলে সালিমের শিকার ২৫ উইকেট।
আফগানিস্তানের একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হামশতউল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নবি, নাজিবউল্লাহ জাদরান, আজমতউল্লাহ ওমারজাই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকি, মোহাম্মদ সালিম সাফি।
বাংলাদেশের একাদশে আফিফ
মেহেদী হাসান মিরাজকে সাত নম্বরে নামিয়ে একজন বাড়তি বোলার খেলানোর যে কৌশল নিয়েছিল বাংলাদেশ, সেখান থেকে আপাতত সরে এলো দল। এই সিরিজের স্কোয়াডে ফেরা আফিফ হোসেন জায়গা করে নিলেন একাদশেও। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে থাকছেন এই বাঁহাতি। এরপরও অবশ্য বাংলাদেশ ৫ বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলতে পারছে সাকিব আল হাসান থাকায়।
আফিফ সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন গত মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বাংলাদেশের একাদশ : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ।
টস জিতে বোলিংয়ে আফগানিস্তান শঙ্কা কাটিয়ে খেলছেন তামিম ইকবাল। টসের জন্য কয়েন ছুড়ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শঙ্কা কাটিয়ে খেলছেন তামিম ইকবাল। টসের জন্য কয়েন ছুড়ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আফগান অধিনায়ক হাশমত উল্লাহ শাহিদি টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠালেন বাংলাদেশকে। উইকেটে সবুজের ছোঁয়া আছে, এছাড়া কিছুটা ময়েশ্চারও দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এজন্যই আগে বোলিং নিয়ে সুবিধাটা কাজে লাগাতে চান আফগানরা।
বাংলাদেশকে ২৫০ রানের মধ্যে আটকে রাখতে চান বলে জানালেন শাহিদি। টস হেরে ব্যাটিং পেয়েও খুশি তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, শুরুর সময়টা নিরাপদে কাটিয়ে দিতে পারলে মাঝের ওভারগুলোয় দ্রুত রান তোলা যাবে।
সবুজ উইকেট
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের উইকেটে ঘাস রেখে দেওয়া হয়েছে যথেষ্টই। টস রিপোর্টে ধারাভাষ্যকার আতহার আলি খান বললেন, সঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে।
আর পড়ুন: পি এস জি অধ্যায় শেষ করে, মেসি যোগ দিচ্ছেন ইন্টার মিয়ামি তে
দ্বিপাক্ষিক লড়াইয়ে বিশ্বকাপের ছায়া
বিশ্বকাপের বাকি আছে আর ঠিক ৩ মাস। ওয়ানডে ক্রিকেটের যে কোনো আলোচনাতেই এখন অবধারিতভাবে থাকে বিশ্ব আসরের উঁকিঝুঁকি। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ শুরুর আগে সেই আলোচনার স্রোত একটু বেশিই তীব্র। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে যে মুখোমুখি হবে এই দুই দলই!
এখানে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, এরপর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপেও গ্রুপ পর্বে লড়বে এই দুই দল। বিশ্বকাপের আগে তাই পরস্পরকে নিয়ে চেনাজানা হয়ে যাবে গভীরভাবেই।
বাংলাদেশ কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে বলেই দিয়েছেন, এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে তাকিয়ে কয়েকজন তারা পরখ করে নিতে চান এই সিরিজে।
মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যান
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই চট্টগ্রামেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। সেখানে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ, শেষ ম্যাচটি জিতেছিল আফগানিস্তান।
সব মিলিয়ে ১১ ওয়ানডের মধ্যে ৭টি জিতেছে বাংলাদেশ, আফগানদের জয় ৪টি।
তামিমকে নিয়ে দোলাচল সিরিজ শুরুর আগের দিন অধিনায়ক তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে জানান, পুরোপুরি ফিট না হলেও প্রথম ম্যাচ খেলবেন তিনি। এই ম্যাচ খেলেই দেখে নিতে চান নিজের শরীরের অবস্থা।
বাংলাদেশ অধিনায়কের এই কথায় প্রশ্ন ও কৌতূহলের জন্ম দেয় অনেক। পুরো ফিট না হয়ে ম্যাচ খেলা কতটা জরুরি, এই প্রশ্নও ওঠে। তামিম অবশ্য এই প্রশ্নে জবাবে বলেন, দলের ভোগান্তির কারণ তিনি হবেন না।
“আমার মনে হয়, আমারও দেখতে হবে যে, কতটা মানিয়ে নিতে পারছি বা পারছি না। তবে আমি এরকম কোনো কাজ করব না, যেটায় দল ভুগবে। কারণ আমি সবসময় বলি, যে কোনো ব্যক্তির চেয়ে দল আগে আসে।
“আমার এখন মনে হচ্ছে, আমি কালকের জন্য প্রস্তুত। ম্যাচ চলাকালে যদি আমার মনে হয় যে, ঠিক প্রস্তুত নই বা এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাহলে আমি ও মেডিক্যাল টিম মিলে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত আমি আগামীকালের ম্যাচের জন্য ফিট। দেখা যাক, কালকে কী হয়।”