ডেঙ্গু জ্বর (Dengue virus) একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ডেঙ্গু হলে ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। অনেক সময় জ্বর একটানা থাকতে পারে, অথবা ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। সেই সাথে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
স্বাভাবিকভাবেই ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আমাদের দেশের মানুষের মাঝে একধরণের প্রবল উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু রোগে (Dengue virus) বিচলিত বা আতঙ্কিত না হয়ে নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নিম্নে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শগুলো তুলে ধরা হলো।
বাড়িতে চিকিৎসা (Home treatment) :
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম (জ্বর চলাকালীন এবং জ্বরের পর এক সপ্তাহ)
- স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খাওয়া, যেমন খাবার স্যালাইন, গুল্কজ, ভাতের মাড়,
- বার্লি, ডাবের পানি, দুধ/হরলিকস, বাসায় তৈরি ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি খেতে হবে।
- জ্বর থাকাকালীন চিকিৎসা, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট (Treatment for fever, paracetamol tablet):
- বাচ্চাদের জন্য বয়স ও ওজন অনুসারে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী
- পূর্ণবয়স্কদের জন্য ২টি করে প্রতি ৬/৮ ঘণ্টা পর পর
- জ্বর থাকাকালীন রোগী দিনরাত সব সময় মশারির ভেতরে থাকবে
জ্বর থাকাকালীন এই ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে:
- অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ (বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিরেকে)
- ব্যথানাশক ওষুধ (এন.এস.এ.আই.ডি গ্রুপ যেমন, ডাইক্লোফেন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপারক্সেন, মেফেন)
- এসপিরিন/ক্রোপিডোপ্রেল (এন্টি প্লাটিলেট গ্রুপ) হৃদরোগীদের জন্য জ্বর থাকাকালীন ও প্লাটিলেট হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে
- ওয়ারফারিন (এন্টিকোয়াগুলেন্ট) হৃদরোগীদের জন্য জ্বর থাকাকালীন ও প্লাটিলেট হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে
- কুসুম গরম পানি বা নরমাল তাপমাত্রার পানি দ্বারা সারা শরীর মোছা (এই ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি দেওয়া)
- বাড়ি ও এর আশপাশের এডিস মশার সম্ভাব্য প্রজননস্থল নিশ্চিহ্ন করা এবং মশার আবাসস্থলে স্প্রে করা
বাড়িতে চিকিৎসা চলাকালীন সতর্কতা (Warning during Home Treatment):
নিচের যেকোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলে অতিসত্বর হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
- পেটে তীব্র ব্যথা
- জ্বর কমার প্রথম দিন রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি
- বারবার বমি/মুখে তরল খাবার খেতে না পারা
- শরীর মুখ বেশি দুর্বল অথবা নিস্তেজ হয়ে পড়া/হঠাৎ করে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়া
- শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে যাওয়া/শরীর অস্বাভাবিক ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
ডেঙ্গু জ্বর বা Dengue virus সম্পর্কে আরও জানতে বা অন্য কোনো ভাইরাস সম্পর্কে জানতে আমাদের কমেন্ট করতে ভুলবেন না। সর্বোপরি আমাদের প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনাদের অনুপ্রেরণা আশা করছি।