আয়ুর্বেদে, বাসক পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কাজ করে। তবে দেখে নিন বাসক পাতার উপকারিতা। কাশি, কফ বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য বাসক পাতার ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। বাসকের বৈজ্ঞানিক নামঃ আধাতোদা ভ্যাসিকা। এটি বেশিরভাগ অঞ্চলের নিকটবর্তী আর্দ্র এবং সমতল অঞ্চলে জন্মে। বাসক মানে পারফিউমার। গ্রামাঞ্চলে, এই বাসক বাড়ির কোণে বা ঝোপের মধ্যে জন্ম নেয়।

বাসক পাতায় একটি ক্ষারযুক্ত উপাদান এবং “ভ্যাসিকিন নামে তেল থাকে। বাসক শ্বাসনালীর লালা গ্রন্থিগুলি সক্রিয় করার জন্য প্রসিদ্ধ হিসাবে কিংবদন্তি। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা শরবত তৈরি করে এবং মলত্যাগে সহায়তা করে।

বাসক পাতার উপকারিতা
বাসক পাতার ছবি

এটি  সর্দি, কাশি এবং প্রদাহজনিত রোগে বিশেষত কার্যকর ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা এই পাতাটি ব্যবহার করে কাশির সিরাপ তৈরি করছে। এটি বিভিন্ন ভেষজ ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার হচ্ছে। তাই চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

বাসক পাতার উপকারিতা

  1. মুখের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে বাসাকের উপকারিতা
  2. বাতের ব্যথা উপশম করতে বাসক পাতার উপকারিতা
  3. লিভারের সমস্যার জন্য অ্যান্থেলিমিন্টিক হিসাবে বাসক পাতার উপকারিতা
  4. রক্ত পরিশোধক হিসাবে বাসক পাতার উপকারিতা
  5. ত্বকের রোগে বাসক পাতার উপকারিতা
  6. মূত্রাশয়ের সংক্রমণ রোধে বাসক পাতার উপকারিতা
  7. জ্বর, সর্দি এবং কাশি ব্যাহার জন্য বাসক পাতার উপকারিতা

সুতরাং নীচে সুন্দর ও সহজ ভাষায় এই শটগুলি আলোচনা করা হলো চলুন তা দেখে নেয়া যাক।

মুখের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে বাসাকের উপকারিতা:

বাসক পাতার থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণা মুখের ভেতরের সব ধরনের সমাস্যা সমাধান করে থাকে। মুখের যেকোন সমস্যা, পায়েরিয়া, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া এবং মুখে দূর্গন্ধ দূর করতে বাসক পাতার গুন  অনেক বেশি। দাঁত ব্যথা নিরাময়ে বাসক পাতা বেটে দাতে ব্যবহার  করলে উপকার পাওয়া যায়। এই বাসক পাতা গরম পানি তে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি কুলি করলে পায়েরিয়া সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।  আমাদের রোগ প্রতিরোধের জন্য বাসক পাতা অনেকে কাজ করে থাকে। যেহেতু এই ভেষজ উদ্ভিদটি অনেক উপকারি, তাই  এই উদ্ভিদটিকে অনাদরে না রেখে যত্নে রাখুন। এই বাসক পাতা খান। ভাল থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।

বাতের ব্যথা উপশম করতে বাসক পাতার উপকারিতা:

সর্দি-কাশি নিরাময়ের পাশাপাশি বাসকের ব্যথা উপশম করতেও বাসক পাতা সমান কার্যকর। বাসক পাতায় অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে যা বাত, বাত ব্যথা, বাত নিরাময়ে সহায়তা করে। যদি মার্সেল ব্যথা বা ভারী ব্যায়াম করার সময় বা অন্য কারণে ব্যাথা শুরু হয়। তখন আপনি চুন ও হলুদ গরম করে তার সাথে বাসক পাতা বেটে মিশ্রিত করেন এবং সেই মিশ্রণটি কিছুক্ষণ  ব্যাথা স্থানে মালিশ করলে দেখবেন আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে উপকার পাবেন।

লিভারের সমস্যা এবং অ্যান্থেলিমিন্টিক হিসাবে বাসক পাতার উপকারিতা:

বাসক পাতা লিভারকে স্বাস্থ্যকর, স্বাভাবিক ও সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে। বাসকের পাতায় মধু মিশ্রিত করে খেলে পেটের বভিন্ন সমস্যা দূর করে, লিভারকে শক্তিশালী করে ও মজবুত করে এমন কি জন্ডিস থেকেও মুক্তি দেয়। যেহেতু এটি অত্যন্ত তিক্ত, এটি অ্যানথেলিমিন্টিক হিসাবে কাজ করে। এই বাসক পাতার রস খেলে বাচ্চা দের পেটের কৃমিকে  বিদায় জানায় এবং মলের রঙ বদলে যায়। বাসক পাতাও অ্যান্থেলিমিন্টিক পাতা হিসাবে ঠিক কাজ করে থাকে।

রক্ত ​​পরিশোধক হিসাবে বাসক পাতা:

রক্তকে বিশুদ্ধ করতে বাসক পাতার উপকারিতা অনস্বীকার্য। আমাদের অনেকেরই ব্রণ বা পেটের সমস্যা বা বিভিন্ন অ্যালার্জি রয়েছে। রক্ত পরিষ্কার না হলে এই সমস্যাগুলি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। নিয়মিত বাসকের পাতা খেলে আমাদের দেহের রক্ত ​​পরিষ্কার হয়। শুধু এটিই নয়,  রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। এটি রক্তের গ্লুকোজ স্তর হ্রাস করতে সহায়তা করে।

ত্বকের রোগের ক্ষেত্রে বাসক পাতার উপকারিতা:

বাসক পাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ত্বকের বিভিন্ন রোগ থামাতে সহায়তা করে। অনেক লোক বিভিন্ন ত্বকের রোগে আক্রান্ত হন। যেমনঃ হারপিস, ধোঁয়া, চুলকানি, দাদ, হজা বা চুলকানি। এই সব রোগের জন্য দশ থেকে ১২টি বাসক পাতা এবং কিছুটা কাঁচা হলুদ একসাথে প্রয়োগ করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এই সব উপকরণ গ্রীষ্মের ঘামের দুর্গন্ধ শরীর থেকে দূর করে থাকে

মুত্রথলির সংক্রমন প্রতিরোধে বাসক পাতার উপকারিতা:

মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রায়শই অল্প পানি পান করা এবং ঘন ঘন প্রস্রাব করার ফলে ঘটে। এই সংক্রমন থেকে রেহাই পেতে বাসক পাতা ও ফুল বেটে মিশ্রি সাথে খেলে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন বাসক পাতা যুক্ত ভেষজ চা পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

জ্বর, সর্দি এবং কাশি নিরাময়ে বাসক পাতার উপকারিতা:

অতিরিক্ত জ্বরের প্রভাবের জন্য শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই তাপমাত্রা কমাতে, বাসক পাতা যথেষ্ট সহায়তা করে থাকে। প্রায়শই দেখা যায় জ্বরে সাতজে ঠান্ডা এবং কাশি হয়। সেই ক্ষেত্রে, বাসক পাতার রস এবং মধুকে বাসক পাতার রসের সাথে একত্রিত করে খেলে অনেক  উপকার পাওয়া যায়। তবে সাধারণ কাশির ক্ষেত্রে, বাসক পাতার সাথে,গোল মরিচ, মিছরি এক লিটার পানিতে সিদ্ধ করে  সেই পানি পান করলে কাশি নিরাময় হয়। এই কথাটি পুরোনো সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে একইভাবে কার্যকর।

যদি আপনার একটু ঠান্ডা বা গরমে সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা  হয়। সে ক্ষেত্রে আপনি একটু বাসক পাতার রস খেয়ে নেন তবে আপনার সর্দি, কাশি গলা ব্যাথা এই সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। বাসক পাতা আমাদের শ্বাসনালীকে প্রশস্ত করতে সহায়তা করে যা শ্বাসকষ্ট হ্রাস করে এবং ব্রঙ্কাইটিস ও হাঁপানি থেকে মুক্তি দেয়। বাসক পাতায় অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে, টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা, হুপিং কাশির মতো ক্রণিক রোগের ক্ষেত্রেও সমান ভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে এই বাসক পাতা।

বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম

এই বাসক পাতা বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন ভাবে খেতে হয়। এই বাসক পাতা বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে খাওয়া হয়। এই বাসক পাতা সাধারণত দুই ভাবে খাওয়া যেতে পারে যেমনঃ ১। বেটে রস করে খাওয়া যায় ২। পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি খাওয়া যায়। আপনি যদি বাসক পাতা বেটে রস করে খেতে চান সে’ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই খুব ভাল করে পাতাটি ধু্নাকেনিতে হবে। এরপরে হামানদিস্তায় দিয়ে বেটে নিতে হবে। ভালো করে সেই রস বের করে নিয়ে খেতে পারবেন।

বাসক পাতা যেহেতু খুব তেতো হয়। সে ক্ষেত্রে আলাদা একটি হামানদিস্তা ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে অন্য কিছু একই হামানদিস্তায় বাটলে পরে সেটিও তেতো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আপনি যদি বাসক পাতা পানিতে ফুটিয়ে ব্যবহার করতে চান। তবে সেক্ষেত্রে বাসক পাতা ভাল করে ধুয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই পানি ঠান্ডা হলে ছেঁকে তবেই ওই পানি পান করবেন।

বাসক পাতার অপকারিতা

এই বাসক পাতার উপকারিতা সম্বন্ধে যেমন জেনে নিলেন, তেমনই বাসক পাতার অপকারিতা সম্পর্কেও জেনে নেওয়া ভালো – চলুন জেনে নেওয়া যাক অপকারিতা গুলো কি কি।

  1. এই বাসক পাতা যে কোন প্রয়োজনের তুলনায় যদি বাসক পাতার ব্যবহার বেশি করা হয় সেক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, বমি, বমিভাম, ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  2. বিশেষ করে এই বাসক পাতা গর্ভবতী মহিলাদের খেতে বারণ করা হয়। কেননা এই বাসক পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা খেলে গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে (বাসক পাতার অপকারিতা) হতে পারে। অতএব, অতিরিক্ত বাসক পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  3. এই বাসক পাতা মধুমেহ রোগ সারাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু এই বাসক পাতা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেললে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে। এমন কি ডায়বেটিস রোগীদের শরীরে অস্বত্বি দেখা দিতে পারে।

বাসক পাতা চিনাত উপায়

এই বাসক গাছ আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশী জন্মে। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের গাছ। এই বাসক গাছ লোকালয়ের কাছেই বেশী জন্মে নেয়। এই গাছ হালক হলুদে রংয়ের ডালপালায়ক্ত ১ থেকে ২ মি. উঁচু হয়। তবে ঋতুভেদে এই গাছ সর্ব্বদাই প্রায় সবুজ থাকে। দেখতে বল্লমাকারের পাতা বেশ বড় হয়। ফুল ঘন ও ছোট আকারে হয়। এই পাতার উপরে গায়ে ঘন এবং মোটা শিরা থাকে।এই বাসক গাছ একটি মাঝারি ধরনের।

এটি সবুজ ও গাঢ় রঙের উদ্ভিদ, তবে এর চেহারায় তেমন কোন ধরনেরবিশেষত্ব দেখা যায় না। এই গাছ সাধারণত ৫-৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে বাংলাদেশের সর্বত্রই এই গাছ পাইয়া যায়। বাসক গাছে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ফুল ফুটে। ফুলের আকার ছোট ছোট ও রং সাদা হয়। তবে বাসক গাছ অন্য এক প্রকারেও আছে এতে হলদেটে লাল রঙের ফুল ধরে থাকে।

রংপুরে বাসক পাতার চাষ

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের নিরুবালা, সুভা রানী, হামিদা খাতুন ও মিলি বেগমের এখন আর না থাক্তে হয় না। এমনকি তার স্বামীর অপমানও শুনতে হয় না। কারণ, এখন তারা পরিবারকে অর্থ সরবরাহ করছে। তাদের মতো, পাঁচগাছী ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামের ৫০০ জন মহিলা পতিত জমি ও রাস্তার ধারে ঔষধি গাছের চাষ করে অতিরিক্ত আয় করছেন। দেশের বিভিন্ন ঔষধি সংস্থাগুলি তাদের চাষ করা ঔষধি গাছগুলি কিনছেন।

পানিয়া গ্রাম উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেই গ্রামের রাস্তার দুই পাশে ঔষধি গাছের বাগান রয়েছে। কয়েক জন মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেলো যে, ২০১১ সালে গ্রামের ১০ জন মহিলা রাস্তার পাশে বাসাকের চাষ শুরু করেছিলেন। তারা এক কিলোমিটার রাস্তার প্রতিটি পাশে, বাড়ির চারদিকে এবং পতিত অঞ্চলের মধ্যে বাসক চারা রোপণ করেছিল। এক বছর পরে পথম পাতা সংগ্রহ শুরু করে। এখন শুকনো বাসক পাতা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪২ টাকায়।

পানিয়া গ্রামের সুলতানা খাতুন বলেন, ‘মোর (আমার) স্বামী দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করিয়া  কোনওভাবে পরিবার চালায়। গত বছর মুই(আমি) ছয়টি মুরগি বিক্রি করছিনু , করিয়্যা মুই(আমি) রাস্তার পাশোত এবং বাড়ির পাশত ২৬০ট্যা বাসক পাতার গাছ লাগাছিনু । মুই(আমি) বাসক পাতা এবং চারা ব্যাচে(বিক্রি)  ৯০০০ টাকা কামাই(উপার্জন) করছিনু। এরপর ওই টাকা দিয়া তিনট্যা ছাগল কিনছিনু(ক্রয়)।

সুলতান মিয়া ও তার স্ত্রী মরিয়ম খাতুন চার বছর আগে তাদের বাড়ির পাশের পতিত জমিতে রোপণ করে ঔষধি গাছ বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে  ৬০০ টি মুরগি কিনে খামার করেছেন এখন তাদের বেশ ভালোভাবে সংসার চলে। মরিয়ম বেগম আরো জানালেন, ৩ মাস পরপর বাসকের পাতা সংগ্রহ করতে হয় এবং গাছ পরিষ্কার করতে হয়। এই বাসক পাতা কাটার পর ২-৩ ঘন্টার ছায়ায় রাখত হয়। এরপর সেই পাতা নিয়ে হাল্কা ছায়াযুক্ত রোদে পাতাগুলি শুকাতে দিতে হয়। তবে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বাসক পাতার গাছ থেকে  তিন মাস পরপর তিন থেকে চার কেজি কাঁচা পাতা কাটা যায়, সেই পাতা শুকানোর পর  এক কেজি হয়।

পর্বতীতে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে পানিইয়া গ্রামের পাশাপাশি , এনায়েতপুর, শাহপুর, কেশবপুর, নাসিরাবাদ, শাদুল্লাহপুর, শাহেদপুর, জাহাঙ্গিরাবাদ, পাইতান ও দাশ মোয়াজসহ সর্বনিম্ন ১৫ টি গ্রামে বাসকের চাষ হচ্ছে।

উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার হাফিজার রহমান রংপুর মিডিয়া কে বলেন, এখানকার মাটি এই ঔষধি গাছের চাষের জন্য উপযোগী। আমাদের তত্ত্বাবধানে, পুরুষ ও মহিলা পীরগঞ্জের ৩০ কিলোমিটার রাস্তার প্রতিটি পাশে এই ঔষধি গাছগুলি চাষ করছেন। এই গাছগুলিতে চাষ করার জন্য সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। গরু-ছাগল খায় না। এই গাছ বর্ষার মৌসুমে পাচ ফুট পরপর এই গাছ রোপণ করা ভাল।

বাসক পাতার মান সম্পর্কে ঢাকার হারবাল শাখার ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ইমেজিং সেন্টারের পরামর্শক ফিদা হাসান লোহানী বলেছেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় ঔষুধি সংস্থাগুলি বাসক পাতা থেকে কাশির সিরাপ তৈরি করছে। বাসকের পাতায় কিছু ক্ষারযুক্ত উপাদান থাকে যা ছত্রাক এবং পোকা-মাকড়ের বিস্তারকে রোধ করে এবং ফলগুলি প্যাকিং এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। গরু ছাগল বাসক পাতা খায় না কারণ কিছুটা দুর্গন্ধ থাকায়।

ঔষধি গাছের বাসক চাষ এখন অর্থ উপার্জনের পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। গ্রামীণ মহিলারা এই বাসক পাতা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। সারাদেশে বেশ কয়েকটি জেলায় রাস্তার পাশে বা আশপাশের বাড়ির আশপাশে বাসক গাছ লাগানো হচ্ছে। বাসক পাতার চাষে কোনও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না। কোনও সার বিষ প্রয়োগ করার দরকার নেই। গবাদি পশুও এর পাতা খায় না। গ্রামের দরিদ্র মহিলারা দিনে অনেক বাসক পাতা সংগ্রহ করছেন। এটি সূর্যের মধ্যে শুকানো হচ্ছে এবং একটি ঔষঢি সংস্থার কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। তারা এ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা পাচ্ছে। শুকনো বাসক পাতা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫-৪২ টাকা।

এই গাছগুলি ঝোপের মধ্যে গ্রামের দিকে এবং ধানের ক্ষেতে বাড়ির চারদিকে বেড়ার চারপাশে নির্বিচারে বৃদ্ধি পায়। তবে এই গাছের ঔষধি গুণাগুণ অপরিসীম। বাসক পাতার সুবিধাগুলি জেনে বিভিন্ন সংস্থা ওষুধ গঠনে এই পাতাগুলিকে সর্বাগ্রে ব্যবহার করে। তাই এখন বাণিজ্যিক ভাবে বাসক পাতার চাষ হচ্ছে। বাসক পাতা সাধারণ ভাবে সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে। বাসক পাতার রস বর্ধিত সময়ের জন্য বুকের মধ্যে জমে থাকা কফ কমাতে বর্ধিত সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। বাসক পাতায় ভ্যাসিকিন নামক একটি প্রাকৃতিক উপাদান এবং কয়েকটি প্রয়োজনীয় অপরিহার্য তেল থাকে যা বুকের মধ্যে কফ দ্রবীভূত করে। এবং ব্রঙ্কাইটিসের বিষয়টি থেকে মুক্তি দেয়।

আরও পড়ুন: তুলসি পাতার ভেষজ গুণাগুণ, উপকারিতা ও ব্যবহার সমূ

আজ আমি  আপনাদের কাছে ঔষধি গাছের সাথে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উপস্থাপন করেছি। আশা করি সবাই উপকৃত হবেন। এটি কেমন অনুভূতি হয়েছে অবশ্যই কমেন্টে মধ্যে জানাবেন।

ধন্যবাদ.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *