দেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। উজানে বর্ষণ ও নেমে আসা ঢলে নদীর পানি তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় বিপৎসীমা (৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) ছুঁই ছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, খুলে দেওয়া হলো ৪৪ গেট
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তাই পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (১৭ জুন) জলকপাটগুলো খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ । এদিন দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার দশমিক ৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় এই পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার ও ৫২ দশমিক ২ সেন্টিমিটার।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। সকাল থেকে পানি প্রবাহ কিছুটা কমতে শুরু করে। এভাবে কমতে থাকলে বিকেলের দিকে পানি কমে যেতে পারে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে। পানি বাড়লে তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তাই বন্যা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন : রংপুর প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম ও সিরিয়ালের নম্বর
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার নদীপারের মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গঙ্গাচড়ার লক্ষিটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘তিস্তার পানি বেড়েছে বলে খবর পেয়েছি। সব এলাকায় সবসময় খোঁজ-খবর রাখাসহ আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।’
টেপা খড়িবাড়ী পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, আমার এলাকার কিছু জায়গায় পানি প্রবেশের খবর পেয়েছি। ওই এলাকাগুলোতে সবসময় খোঁজ-খবর রাখছি।
আরও পড়ুন : রংপুরের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর
হঠাৎ তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। ফসলের খেত পানিতে ডুবে ফসলহানির শঙ্কা করছেন কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব সমকালকে বলেন, ‘শনিবার সকালে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় নদীর পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার। যদিও পরে কমতে শুরু করেছে। এ সময়ে নদীর পানি বাড়বে-কমবে এটাই স্বাভাবিক।’