আজ থেকে পুরোপুরি বন্ধ হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম ও সর্বাধুনিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। পিজিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট। এবং কয়লা সংকটে ২৫ শে মে এর একটি ইউনিট বন্ধ হয়েছে । কয়লার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় অবশিষ্ট ইউনিট টি বন্ধ হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকে ও সমাধান মেলেনি।
পায়রা বিদ্যুৎ কন্দ্রে বন্ধ হলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হলে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। এতে দেশে ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কয়লা আনা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বাকিতে কয়লা এনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সচল রাখা হয়েছিল। এতে প্রতিষ্ঠানটির দেনা প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। এই বকেয়া ঋণ পরিশোধ না করলে নতুন করে কয়লা আনা সম্ভব হবে না।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে নানা ট্রল ও স্ট্যাটাস। বিদ্যুৎ গেলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে ওই এলাকার বিদ্যুৎ কোম্পানি। ফেসবুকের ট্রল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ বিদ্যুৎ বিভাগের শীর্ষকর্তারা।
এই গরমে লোডশেডিং চরমে – দেশ রুপান্তরের শিরোনাম। খবরে বলা হয় টানা চার দিন ধরে বাড়ছে তাপমাত্রা। গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন সে তুলনায় না বাড়ায় লোডশেডিং ক্রমে বাড়ছে।
একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে লোডশেডিং-এই দুইয়ে মিলে মানুষ ও প্রাণীর প্রাণ ওষ্ঠাগত। শুক্রবার ছুটির দিনে অনেকেই বাসা-বাড়িতে ছিলেন। যে কারণে কিছুটা ফুরসত ছিল। কিন্তু গরমের এমনই দশা ছিল যে, ফ্যানের নিচেও ঘামতে হয়। পুকুরের পানি আর বাসার ছাদের ট্যাংকির পানি পর্যন্ত গরম ছিল। এমনকি ঘরের খাবার পানি গরম হয়ে যায়। দাবদাহে প্রায় সব বয়সের মানুষেরই নাকাল অবস্থা। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। খেটে খাওয়া মানুষেরও ত্রাহিদশা। এই গরমে ডায়রিয়া-আমাশয়-জন্ডিসের মতো পানিবাহিত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ঢাকার মহাখালীর আইসিডিডিআর.বিতে বেড়েছে রোগীর চাপ। ঢাকা মেডিকেল, ঢাকা শিশু হাসপাতালেও রোগী ভর্তি বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তীব্র খরতাপ অব্যাহত থাকতে পারে আরও অন্তত এক সপ্তাহ। বৃহস্পতিবারের আগে আকাশে মেঘের আনাগোনার কোনো পূর্বাভাস নেই। ফলে বৃষ্টিশূন্য দিন আরও প্রলম্বিত হবে। সেই সঙ্গে বাড়বে তাপমাত্রা। ফলে গরমের প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
লোডশেডিংয়ে বেশি নাজুক ৬৩টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
গরমে অতিষ্ঠ মানুষ রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। অনেকে গরম সহ্য করতে না পেরে ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। অনেক এলাকায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আগে রাজধানী ঢাকায় লোডশেডিং তেমন না হলেও এখন বিভিন্ন এলাকায় চার-পাঁচবার করে পাঁচ-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ঢাকার বাইরের শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় শিশু ও বয়স্কদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
দিনাজপুরসহ দেশের উত্তর জনপদ। অব্যাহত তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জনজীবন। দিনাজপুরের আবাহাওয়ার দিকে যদি দেখা যায় শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি। গত কয়েক দিন ধরেই দিনাজপুরসহ এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।বেশিরভাগ সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র এই গরমে বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। গাছতলায়ও স্বস্তি নেই। গরম বাতাসে শরীর জ্বালাপোড়া করছে।
আরও পড়ুনঃ যেসব পণ্যের দাম কমতে ও বাড়তে পারে
শহরে জরুরি প্রয়োজনে ছাতা নিয়ে বের হলেও স্বস্তি নেই। পিচঢালা রাস্তা ও গরম বাতাসে যেন মুখ ও শরীর ঝলসে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
বাজেট নিয়ে গতকাল দুটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। একটি আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়, আর অন্যটি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। এ দুটি সংবাদ সম্মেলনের খবর ঘিরেই প্রধান শিরোনাম করেছে সংবাদপত্রগুলো।
দৈনিক যুগান্তর তাদের প্রথম পাতায় পাশাপাশি দুটি শিরোনাম করেছে এই দুই সংবাদ সম্মেলন ঘিরে। একটা হল আইএমএফের পরামর্শ নেই – বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী।
যেখানে বলা হচ্ছে প্রস্তাবিত বাজেটে আইএমএফকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই-আইএমএফ’র পরামর্শে বাজেট দেওয়া হয়নি। সার্বিকভাবে তারা পরামর্শ দিয়েছে। তবে যেটুকু গ্রহণযোগ্য তা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ রাতে বাড়তে পারে ।
অন্যদিকে সিপিডির বাজেট মূল্যায়ন ঘিরে যুগান্তরের শিরোনাম আইএমএফের শর্তের প্রতিফলন রয়েছে। এখানে বলা হয় বাজেটে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়নের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।