শীতের মৌসুমের ফুটন্ত সরিষা ফুলে হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিলে বসে হলুদের রাজ্য। এখানে আছে হলুদের চাদর বিছানো, চোখজুড়ানো দিগন্ত বিস্তৃত সরিষা ক্ষেত। এছাড়াও প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বিলটি দেখতে আসে শত শত মানুষ ।

হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিলের বর্ণনা :

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার, উল্লাপাড়া উপজেলার বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাওড়া কাসেম বিল ও ৯নং ওয়ার্ডের হাওড়া কদমতলা একটি অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। প্রায় প্রতিদিন শত শত লোক এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। আপনি চাইলে আসতে পারেন এবং উপভোগ করতে পারেন মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য।

হাওড়া কাসেম বিল
হাওড়া কাসেম বিল

এখানে শীতের রিক্ততায় রং ও প্রাণের স্পন্দন নিয়ে আসে সরিষা ফুল। দিগন্ত বিস্তৃত হলুদ সরিষা ফুলের এই হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিল। এখানে এসে মনে হবে, আপনি এসেছেন কোন রূপকথার গল্পের মতো কাল্পনিক হলুদের রাজ্য। দু’চোখ যতদুর যায় শুধু হলুদের সমারোহ।

শুধু শীতে নয় বর্ষায়ও রয়েছে এখানকার চমক। কল্পনা করুন, বিলের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করে, তার মাঝখানে আঁকা-বাঁকা রাস্তা। অপরূপ এক দৃশ যা ভেসে আসে চলন বিল থেকে। রাস্তার দু’ধারে ঘুরে বেড়ায় নানান রঙের নৌকা। হাজার লোকের ঢল নেমে প্রতিবছর চলে নৌকাবাইচ খেলা। কেউবা আবার নৌকায় ভেসে বেড়ায় দূর দূরান্তে।

হাওড়া কদমতলার মুখে
হাওড়া কদমতলার মুখে

বর্ষার আগে এখানে ধান রোপণ করা হয়। ধান রোপন করার কয়েকদিন পর এখানে আসে আরও একটি দৃশ। যা আমাদের দেশের রং। দুচোঁখের দৃষ্টি যতদূর যায় দেখতে পাবেন সবুজের সমারোহ। সবুজের মাঝে আঁকা-বাঁকা রাস্তা আপনার মনকে আঁনন্দে মাতিয়ে দিবে। হারিয়ে যাবেন কোনো এক অজানা স্বপ্নের দেশে।

কাসেম বিলের নামকরণের ইতিহাস :

কাসেম বিলের পূর্ব নাম ছিল মৈচ্যার বিল। স্থানীয় লোকদের মোট অনুসারে এই মৈচ্যার বিলে ভুত থাকতো বলে ধারণা করা হয়। বাচ্চাদের মৈচ্যার বিলের ভুতের ভয় দেখিয়ে বাড়ি হতে বের হতে দিতো না। একসময় কাশেম নামে এক বেক্তি এই বিলটি সংস্কার করে সাথে রাস্তা নির্মাণ করে। এর মধ্যে একটি রাস্তা ধর কাটে। এরপর এখানকার নাম হয় কাশেমের ধর। পরবর্তীতে কাশেমের ধরে থেকেই মূলত কাশেমের বিল নাম পরিচিতি পায়।

যেভাবে যাবেন:

প্রথমে সিরাজগঞ্জ গোল চত্বর থেকে উল্লাপাড়া শ্যামলীপাড়া বাজারে যাবেন (13 কি.মি.) | তারপর সিএনজি বা ভ্যানে করে মোহনপুর যাবেন (9 কি.মি.) | এরপর সেখান থেকে আবারও ভ্যানে করে বড়পাঙ্গাসী বাজার (4 কি.মি.) | এরপর আপনার কাংখিত হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিল (2.5 কি.মি.) | আপনি চাইলে সরাসরি উল্লাপাড়া শ্যামলীপাড়া বাজার বা মোহনপুর থেকে সরাসরি হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিলের জন্য সিএনজি বা ভ্যানে ভাড়া করতে পারেন।

লোকেশনঃ বড়পাঙ্গাসী(হাওড়া কদমতলা ও কাশেম বিল), উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।

ভ্রমণের সময়কাল:

প্রায় প্রতিদিন শত শত লোক এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে এখানে। আপনি চাইলে আসতে পারেন এবং উপভোগ করতে পারেন এই মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। সারা বছর এখানে ভ্রমণ করতে পারেন। কেননা এখানে একেক মৌসুমে একেক রূপ ধারণ করে। আপনি শীতকালে (নভেম্বর ১ থেকে 15 জানুয়ারি এর ভিতরে) গেলে হলুদদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আবার ফাল্গুন গেলে সবুজের চিত্র দেখতে পারেন। আর বর্ষাকালে গেলে বিলের থৈ থৈ করা পানির মাঝখানে ভাসতে পারবেন।

প্রায় প্রতিদিন শত শত লোক এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে এখানে। আপনি চাইলে আসতে পারেন এবং উপভোগ করতে পারেন এই মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। বন্দুরা, বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের হাওড়া কদমতলা ও কাসেম বিল কেমন লেগেছে তা জানিয়ে নিচে একটি কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ !!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *