কিসমিস এমন একটি খাবার যার উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কিসমিসে ভিটামিন সহ বিভিন্ন প্রকার উপাদান রয়েছে। কিসমিস দেহের অনেক রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। কিসমিস ভিজিয়ে খেতে পারলে আরো বেশি উপকার হয়ে থাকে। কিসমিছে কে বলা হয় শুকনো খাবারের রাজা।
নিয়োমিত কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিসে অনেক প্রকার উপাদান রয়েছে যেমন : নিজ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ভিটামিন,ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, পলিফেনলস সহ আরো বিভিন্ন ফাইবার আছে। কিসমিস মানবদেহে প্রচুর পরিমানে শক্তি যোগান দেয়। কিসমিস দেহে রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে। শুধু রক্ত উৎপাদনেই নয় দেহের রক্ত পরিষ্কার করতে অনেক বেশি কাজ করে কিসমিস। নিয়মিত কিসমিস ভিজানো পানি পান করতে পারলে মানবদেহে কখনই কোষ্টকাঠিন্য দেখা দিবে না।

কিসমিসের কয়েকটি যাদুকরী উপকারিতা

  • কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে
  • ঘুম ভালো হয়
  • কিসমিসের পানি লিভার পরিষ্কার করে
  • কিসমিস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
  • যৌন দুর্বলতা দূর করে
  • মানব দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
  • হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন

১# কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে :

কিসমিস মানবদেহে প্রচুর পরিমানে উপকার করে। কিসমিস নিয়মিত খাওয়ার কারণে শরীরের কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর মত সমস্যা দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে। প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে শুকনো কিসমিসের মাঝে। আর ফাইবার মানব দেহের পরিপাকক্রিয়ায় দ্রুত সাহায্য করে থাকে। পরিপাকক্রিয়ায় দ্রুত কাজ করার কারণে খুব দ্রুত খাবার হজম হয়। খাবার ঠিক মতো হজম করতে পারলে কখনই  কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর মত সমস্যা দেখা দিবে না। তাই কিসমিস কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে থাকে।

আরো পড়ুন : রাতকানা রোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা

২# রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :

কিসমিসে অনেকগুলো উপাদান রয়েছে যার মাজে ভিটামিন ,খনিজ ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং পলিফেনলগুলির মতো আরো বিভিন্ন যৌগগুলির পুষ্টি উপাদান আছে। এইসব মানবদেহের ভিতরে ফ্রির‌্যাডিকালগুলোর সাথে লড়াই করে এবং স্থিতিশীল করে। এগুলো মানুষের ভিতরের শ্বেত রক্তকণিকা সহ কোষগুলিকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং দেহের ভিতরে গঠন করে ইমিউন সিস্টেম। কিসমিস প্রতিদিন খেতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

আরো পড়ুন : ২৫ টি ভেষজ গাছের নাম ও উপকারিতা

৩# রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে :

কিসমিস রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে থাকে। কিসমিস মানবদেহের অনেক প্রকার কাজ করে থাকে ,তার মেজর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এটি একটি প্রধান ক্রীড়া। মানুষের রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারলে ,মানুষ যে কোনো মুহূর্তে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। শুকনো কিসমিস এর মাজে অনেক বেশি পটাশিয়াম থাকে। আর এই পটাশিয়াম থাকার কারণে কিসমিস রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। এই কিসমিস দেহের সোডিয়ামের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

আরো পড়ুন : খেজুর খাওয়ার উপকারিতা। রস সংগ্রহের উপায় কি

৪# ঘুম ভালো হয় :

নিয়মিত যদি ঘুম না হয় তাহলে,চেহারা দিন দিন খারাপ হয়ে যাবে এবং চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে যাবে। নিয়মিত ঘুম হওয়ার জন্য কিসমিস ভালো কাজ করে। কিসমিসে প্রচুর পরিমানে আয়রন থাকার কারণে সঠিক ঘুম হওয়ার জন্য জাদুকরী ভূমিকা পালন করে। আয়রন এমন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে না বরং বিপাক ক্রিয়া উন্নত করতে সঠিক ভাবে কাজ করে। কিসমিস খেলে শারীরিক ভাবে সুস্থ ফিল অনুভব করে,মেজাজ ভালো থাকে এবং সঠিক ঘুম হইতে সহায়তা করে। তাই প্রতি দিন খাবারের তালিকায় কিসমিস রাখা জরুরি।

আরো পড়ুন : আনারসের উপকারিতা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া

৫# কিসমিসের পানি লিভার পরিষ্কার করে :

কিসমিসকে শুকনো ফলের রাজা বলা হয়। কিন্তু কিসমিস ভিজিয়ে খেলে আরো বেশি উপকার পাওয়া যায়। প্রতি দিন সকালে যদি কয়েকটা কিসমিস ভিজানো পানি পান করা যায়,তাহলে লিভার পরিষ্কার করতে অনেক কাজ করে। নিয়মিত কিসমিস ভিজানো পানি পান করলে এসডিটি এবং লিভার পরিষ্কারে কাজ করে। এছাড়াও হৃদরোগ ও কোলেস্টেরল বালো রাখে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কিসমিস উৎপাদন করা হয়। মানবদেহে আয়রনের পাশাপাশি রক্তে লোহিত কণিকা বাড়াতে সাহায্য করে কিসমিস। তাই লিভার পরিষ্কার রাখতে কিমিসের গুরুত্ব অপরিসীম।

৬# কিসমিস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে :

কিসমিস অনেক প্রকার উপকার করে থাকে,তার মাজে হজম শক্তির একটি বড়ো ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষ খাবার খেয়ে বেছে থাকে ,কিন্তু ওই খাবার যদি হজম করতে না পারে তাহলে সঠিক ভাবে চলাফেরা করতে পারবে না। হজম শক্তি দুর্বল হলে মানুষের পেতে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা দিবে। এর ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পরবে। তাই শুকনো কিসমিস যদি প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে এই সমস্যা দেখা দিবে না। কিসমিস নিয়মিত খেলে পেটের সকল সমস্যার সমাধানা হবে ঔষধ ছাড়াই। তাই প্রতিদিন কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য অনেক উপকার।

৭# কিসমিস যৌন দুর্বলতা দূর করে :

কিসমিস খেলে যৌন সমস্যার সমাধান হয়। ডাক্তারের মতে প্রতিদিন কিসমিস খাওয়া প্রয়োজন যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য। কিসমিস খেলে যৌন দুর্বলতা দূর করে এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিসমিস প্রতিদিন খেলে মন ও দেহ ভালো থাকে যার ফলে যৌন মিলনে তৃপ্তি ও দীর্ঘক্ষণ হয়। প্রতিদিন নিয়মিত ৫-৭ টা কিসমিস খেতে পারলে আপনার যৌন সমস্যা চিরদিনের জন্য ভালো হয়ে যাবে। তাই কিসমিস যৌন সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি উপকার করে থাকে।

আরো পড়ুন : আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা

৮# মানব দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে :

কিসমিস মানব দেহের ওজন বাড়াতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। কিসমিছে প্রচুর পরিমানে উপাদান রয়েছে। যা মানবদেহের ওজন বাড়ানোর জন্য অনেক কাজ করে। কিসমিস আয়রনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। কিসমিস শরীরের সোডিয়াম মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যা দেহের জন্য অনেক বেশি উপকার। তাই বলা যায় কিসমিস মানব দেহের ওজন বাড়ানোর জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৯# হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন :

কিসমিস হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন করে থাকে। কিসমিসে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকার কারণে হাড় ও দাঁত এর অনেক বেশি উপকার হয়ে থাকে। বোরন নামক এক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টও কিসমিসে থাকে যার ফলে হারের অনেক বেশি সহায়তা করে থাকে। হাড় ও জয়েন্ট এর জন্য খুব উপকারী বোরন মেনোপজ ঘটে যাওয়া নারীদের জন্য। কিসমিস সঠিকভাবে হারের স্বাস্থ্য বর্ধন করতে কাজ করে। কিসমিস প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখলে দেহে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে। তাই আমরা বলতে পারি কিসমিস হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন করতে সহায়তা করে।

১০# ক্যান্সার প্রতিরোধে :

কিসমিসে মাজে একপ্রকার অ্যান্টিওক্সিডান্ট থাকে যা ক্যাটেচিন নাম পরিচিত। এই অ্যান্টিওক্সিডান্ট মানব দেহে ভেসে বেড়ানো ফ্রি র‍্যাডিকলগুলির সাথে লড়াই করে তা ধ্বংস করে দিতে সাহায্য করে। এই র‍্যাডিকলগুলি মানুষের মাজে ক্যান্সার নামক রোগ তৈরী করে থাকে। তাই কিসমিস নিয়মিত খাওয়ার কারণে শরীরে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট এর পরিমান বেড়ে যায়। আর এর ফলে দেহে ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে। কিসমিস  ক্যান্সার রোগে সমাধানের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি কিসমিস মানব দেহের বহুল উপকারিত একটি উপাদান ,যা মানুষের বিভিন্ন প্রকার রোগের সমস্যার সমাধান করে থাকে। আমরা মানব দেহের সকল সমস্যা সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরে থাকি। তাই আপাদের সুবিধার্তে এইপোস্ট গুলো তুলে ধরে থাকি। আমাদের পোস্ট সম্পর্কে কোনো মন্তব্য থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।  এই রকম পোস্ট পেতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন। ধন্যবাদ!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *