ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই । ডেঙ্গু একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা যা ডেঙ্গু ভাইরাস এর কারণে উৎপন্ন হয়। এটি একটি প্রধান সংক্রমণ যা মশারি সম্পূর্ণ সংক্রমণ চক্রের একটি অংশ। ডেঙ্গু ভাইরাস এর প্রধান প্রজনন মাধ্যম হল এডিস এজিপ্টি মশা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ সম্বন্ধে মূলত উল্লেখযোগ্য উচ্চতা জ্বর, শরীরে মালস্তম্ভে ব্যথা, মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা, চোখে লাল পড়া ও স্বাদপরিবর্তন থাকতে পারে। কিছু মামুলি মামলার ক্ষেত্রে, এই লক্ষণগুলি সামান্য হয়ে যেতে পারে এবং স্বয়ংভু সীমিত হতে পারে। তবে, কিছু গুরুতর মামলায়, ডেঙ্গু জ্বর কারণে হৃদয়, ফুসফুস, যকৃত এবং অন্যান্য অংগগুলির ক্ষতি উত্থান করতে পারে, যা জীবনযাপনের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য মশারি নিয়ন্ত্রণ, পানির সংরক্ষণ, এডিস এজিপ্টি মশারি এর বাসস্থানের মধ্যে যত্ন এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা বাস্তবায়নে শারীরিক অবস্থার উন্নতি ও প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হতে পারে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সরকারের এবং সমাজের সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি ব্যক্তি থেকে অন্যটি সরকার।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার নিয়ম:
বর্ষায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেড়ে যায়। এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর হলো ডেঙ্গু। এ ভাইরাসের চারটি স্ট্রেইন (ডেন-১, ২, ৩ ও ডেন-৪)। এর যে কোনো একটি দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে। আর এ ভাইরাস বহন করে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির মশা।
বর্ষায় এডিস ইজিপ্ট মশা বংশবিস্তার করে। বিশেষ করে ঘরের ভেতরে বা চারপাশের জলাবদ্ধ পানিতে এই মশা বংশবিস্তার করে। এডিস ইজিপ্ট মশা ডেঙ্গু বিস্তারে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে। এ মশার একটি কামড়ই ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য যথেষ্ট।
আবৃত থাকা: হাত আর পা মশার জন্য সবচাইতে সহজ লক্ষ্য। তাই ঘরে বাইরে যেখানেই থাকুন, চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব কাপড়ে আবৃত থাকা। ফুল প্যান্ট, ফুলহাতা শার্ট, জুতা ইত্যাদি দিয়ে শরীর ঢেকে রাখতে হবে। ঢিলেঢালা কাপড় পরাই হবে সবচাইতে আরামদায়ক।
মশা দুরে রাখা গাছ: মশা তাড়ানোর একটি কার্যকর এবং স্বাস্থ্যকর উপায় হল মশা দূরে রাখে এমন গাছ ঘরের আশপাশে রোপন করা। তুলসি, সিট্রোনেলা, লেমনগ্রাস ইত্যাদি একাজে কার্যকর।
আরও পড়ুন: পুরুষের পাঁচ সমস্যার সমাধান
ঘরোয়া সমাধান: মশা দূরে রাখার নিরাপদ উপায় হল ঘরোয়া উপাদান, যা প্রায় সবার রান্নাঘরেই আছে। মৃদু কর্পূর, সরিষার তেলের সঙ্গে মেশানো ক্যারোম সিড বা আজওয়াই ইত্যাদি মশা তাড়াতে কাজে আসে। নিমের ও ল্যাভেন্ডার তেল, ইউক্যালিপ্টাস অয়েল ইত্যাদিও উপকারী।
ময়লা রাখার পাত্র: যেকোনো ময়লা রাখার পাত্র প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। আর ব্যবহারের সময় তা ঢেকে রাখতে হবে। জীবাণু ভরা ময়লার পাত্র মশা টানে। এছাড়াও ঘরের কোণা, ছায়াবৃত স্থান, বাগান ইত্যাদিও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
বদ্ধ পানি অপসারণ: মশার বংশবিস্তারের আদর্শ স্থান হল জমে থাকা পানি। বৃষ্টির দিনে জলাবদ্ধতা বাড়ে, ফলে মশার বংশবিস্তারের স্থানও বাড়ে। তাই মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে অবশ্য করণীয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হল যেসব জায়গায় পানি জমে থাকতে পারে সেগুলো পরিষ্কার করে ফেলা। পাশাপাশি গাছে বেশি পানি দেওয়া যাবে না।
মশা তাড়ানোর ওষুধ: মশা তাড়ানোর স্প্রে, মলম ইত্যাদি ব্যবহারে জোর দিতে হবে। ঘরে কিংবা বাইরে সবখানেই এগুলো ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে, শিশুদের ক্ষেত্রে এগুলো অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশারী হলে সব ধরনের রোগ দূরে থাকবে। এজন্য খাবারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ‘সাপ্লিমেন্ট’ও গ্রহণ করা যেতে পারে।
দরজা-জানালা বন্ধ: দিনের শেষে এবং রাতেই মশার উপদ্রব বেশি হয়। তাই এই সময় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখলে মশা ঢুকতে পারবে কম। পাশাপাশি জানালা ও দরজার ‘মসকিউটো নেট’ লাগানো যেতে পারে। দিনের বেলাও ঘরে মশা ঢুকতে পারে। তাই জানালায় নেটের পাল্লা ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: খেজুর খাওয়ার উপকারিতা। রস সংগ্রহের উপায় কি
মশা তাড়ানোর ওষুধ: মশা তাড়ানোর স্প্রে, মলম ইত্যাদি ব্যবহারে জোর দিতে হবে। ঘরে কিংবা বাইরে সবখানেই এগুলো ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে, শিশুদের ক্ষেত্রে এগুলো অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। বর্ষার মৌসুমে দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হবে। আর জানালা খোলা রাখলেও নেট দিয়ে রাখতে ভুলবেন না। বিকেল থেকেই মশার উপদ্রব বাড়তে থাকে। তাই এ সময় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখলে মশা ঢুকতে পারবে কম।
মশা দূরে রাখতে মৃদু কর্পূর, সরিষার তেলের সঙ্গে মেশানো ক্যারোম সিড বা আজওয়াই ইত্যাদি ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে কাজে লাগান। নিমের ও ল্যাভেন্ডার তেল, ইউক্যালিপ্টাস অয়েল ইত্যাদিও উপকারী।
বর্ষায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার বিকল্প নেই। কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে, সব ধরনের রোগ থেকে নিস্তার পাবেন।