একদিনের জন্য হলেও বিলিয়নিয়ার হওয়ার স্বপ্ন অনেকের আছে। আমরা কে না চাই অনেক টাকা মালিক হতে এবং অনেক ডলারের মালিক হতে। আমরা কে না চাই ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস নাকি বিল গেটস এদের মতো হতে ।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনি ব্যাক্তির তালিকা ১ম স্থানে রয়েছে মানসা মুসা সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন চতুর্দশ শতাব্দীর মালির এক সম্রাট মুসা। ‘মানসা’ শব্দটির অর্থ রাজা। চতুর্দশ শতাব্দীতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি ছাড়াও আরও বেশকিছু অঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছিলো তার শাসন।

বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি

তিনি ছিলেন আফ্রিকার বর্তমানে গরিব দেশ মালির রাজা । ১৩১২ সালে মালির সিংহাসনে বসেন মুসা কেইটা। রাজা হওয়ার পর তারই নামকরণ করা হয় মানসা মুসা। এর ভেতর মালি পরিণত হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী সাম্রাজ্যে । ইতিহাসবিদদের মতে, তার সম্পত্তির পরিমাণ এতো ছিল যে, তিনি প্রথম আফ্রিকান শাসক যিনি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। মানসা মূসার কাছে এত পরিমাণ স্বর্ণ ছিল যে, তিনি তার রাজ্য থেকে ১০ কিলোমিটার এর একটি পথ স্বর্ণ দিয়ে ঢেকে দিতে পারতেন। ভবিষ্যতেও কেউ তা ছুঁতে পারবেন না। আফ্রিকার মালির মতো এতো গরিব দেশের রাজা কিভাবে সর্বকালের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হলেন? প্রশ্নটা আসতেই পারে।
মালি সাম্রাজ্য তখন মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। প্রকৃত অর্থেই সোনা ফলত মালির মাটিতে। আর সেই সোনাই তাকে সর্বকালের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।

বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি

প্রচুর সোনার খনি রয়েছে মালিতে। মানসা মুসাই প্রথম এই খনির সন্ধান পান।

মুসার সিংহাসনে আরোহণের সময়, মালির বিশাল অংশে ঘানা সাম্রাজ্যের প্রাক্তন অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল, যা মালি জয় করেছিল। মালি সাম্রাজ্যের মধ্যে ছিল এমন জমি যা এখন গিনি, সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, গাম্বিয়া এবং আধুনিক মালি রাজ্যের অংশ। মুসা তার শাসনামলে “মেলের আমির”, “ওয়াঙ্গারার খনির প্রভু”, এবং “ঘানাতার বিজয়ী” এর মতো অনেক উপাধি ধারণ করেছিলেন।

আরো পড়ুন : জীবনে সফল হওয়ার উপায়

ইতিহাসবিদদের মতে,মূসা অধিক পরিচিত ছিলেন তার কথিত হজ্জপালনের জন্য ( ১৩২৪ থেকে ১৩২৫ )। প্রচলিত আছে, তার হজ্জবহরের কাফেলায় রসদপূর্ণ থলে বহনকারী ৬০,০০০ লোক ছিল, সাথে ছিল ৫০০ গোলাম যারা প্রত্যেকে একটি করে সোনার দন্ড বহন করছিল এবং ৮০ থেকে ১০০টি উট ছিল, যেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় ১৪০ কেজি সোনার গুঁড়ো বহন করছিলো। তার এই যাত্রাপথে তিনি প্রায় কয়েকশত কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেছিলেন। কায়রোতে তিনি এত বেশি স্বর্ণ বিতরণ করেছিলেন যে, বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে স্বর্ণের দাম তুলনামুলকভাবে অনেক কম ছিল।

ইসলাম প্রচারে সহায়তা:

মানসা মূসা ইসলাম প্রচারেও সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি একজন অনুগত মুসলিম ছিলেন এবং কুর’আনের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে অনেকগুলো বিদ্যালয় নির্মাণ করেন। তিনি উত্তর আফ্রিকার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী প্রেরণ করতেন।

বর্তমান সময় হিসেবে সম্পদের পরিমাণ:

বর্তমানে ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ ১৯৬ বিলিয়ন ডলার ও জেফ বেজোসের সম্পদের পরিমাণ ১২৩.৭ বিলিয়ন ডলার। মানসা মুসার সময়ে জিনিসপত্র ছিলো নিতান্তই সস্তা। তাই তাকে সর্বকালের শীর্ষ ধনী মানতে অনেকেরই কষ্ট হতে পারে। তবে হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে, ১৩৩৭ সালে মৃত্যুর সময় মুসা যা রেখে গিয়েছিলেন, বর্তমান সময়ের হিসেবে সেই সম্পদের মূল্য অন্তত ৪০০ বিলিয়ন ডলার ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *