মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ বলা হয়েছে , ইউক্রেনকে নতুন করে আরো ২০০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিতে যাচ্ছে আমেরিকা। ইউক্রেন সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনের সেনাদের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে এসব সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) একজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলেছে, চলতি সপ্তাহেই সম্ভবত এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে । ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ইনিশিয়েটিভ-এর আওতায় মার্কিন সরকার এ সমস্ত অস্ত্র সরবরাহ করবে। এই আইনের আওতায় এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনকে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র দিয়েছে আমেরিকা।

নতুন এই অস্ত্র প্যাকেজে দুই ধরনের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা শত্রুর ট্যাক্টিক্যাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল এবং যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে সক্ষম। এছাড়া, আমেরিকা ইউক্রেনের জন্য ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য এমআইএম-২৩ হক ক্ষেপণাস্ত্র দেবে।
ইউক্রেনকে আরো ২০০ কোটি ডলারের অস্ত্র দিবে আমেরিকা
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বড় হামলা চালিয়েছে। অবশ্য, সে সমস্ত হামলা সফলতার সাথে মোকাবেলার দাবি করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের শীর্ষ পর্যায়ের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের আসল পাল্টা অভিযান এখনো শুরু হয়নি।

আরও পড়ুন : উড়িয়ে দেওয়া হলো খেরসনের বাঁধ বড় বিপদের শঙ্কা রেডক্রসের

দেখা যাক কে এগিয়ে :

  • দুটো দেশের সৈন্য সংখ্যা, যুদ্ধবিমান, রণতরী বা সামরিক সরঞ্জামেও ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
  • বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের সৈন্য সংখ্যা দুই লাখ আর রাশিয়ার সৈন্য সংখ্যা আট লাখ ৫০ হাজার। তবে উভয় দেশের রিজার্ভ সৈনিক রয়েছে আরও আড়াই লাখ।
  • রাশিয়া সামরিক খাতে প্রতি বছর ব্যয় করে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, সেখানে ইউক্রেন তার ১৫ ভাগের প্রায় এক ভাগ খরচ করে- এক হাজার একশো ৮৭ কোটি ডলার।
  • রাশিয়ার আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আড়াই লাখ, তবে ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার।

যুদ্ধবিমানঃ

  • রাশিয়ার মোট সামরিক আকাশযান রয়েছে ৪ হাজার ১৭৩টি, ইউক্রেনের মাত্র ৩১৮টি।
  • ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান ৬৯টি হলেও রাশিয়ার রয়েছে ৭৭২টি।
  • শুধুমাত্র আক্রমণকারী বিমান রাশিয়ার রয়েছে ৭৩৯টি, ইউক্রেনের মাত্র ২৯টি।
  • ইউক্রেনের পরিবহন বিমান মাত্র ৩২টি হলেও রাশিয়ার রয়েছে ৪৪৫টি।
  • রাশিয়ার মোট হেলিকপ্টার রয়েছে ১,৫৪৩টি, যেখানে অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৫৪৪টি। অন্যদিকে ইউক্রেনের হেলিকপ্টার রয়েছে ১১২টি, অ্যাটাক কপ্টার ৩৪টি।

সামরিক নৌযানঃ

সামরিক নৌযানের দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া।

আরও পড়ুন : আফগানিস্তানের মসজিদে বোমা হামলা , নিহত ১৬

অন্যান্য সরঞ্জাম

  • রাশিয়ার যেখানে ১,২১৮টি বিমান বন্দর রয়েছে, ইউক্রেনের রয়েছে ১৮৭টি। বাণিজ্যিক জাহাজ রাশিয়ার ২,৮৭৩টি থাকলেও ইউক্রেনের আছে ৪০৯টি।
  • এর বাইরে রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, কিন্তু ইউক্রেনের এরকম কোন অস্ত্র নেই।
  • রাশিয়ার এস-৪০০ নামের অত্যন্ত শক্তিশালী মিসাইল সিস্টেম রয়েছে, যা আকাশ প্রতিরক্ষায় খুবই কার্যকর, তবে ইউক্রেনের এরকম কোন ব্যবস্থা নেই।
  • রাশিয়ার নৌ সামরিক যান ৬০৫টি থাকলেও ইউক্রেনের রয়েছে ৩৮টি।
  • রাশিয়ার একটি বিমানবাহী রণতরী থাকলেও ইউক্রেনের এরকম কোন রণতরী নেই। তেমনি রাশিয়ার ৭০টি সাবমেরিন থাকলেও ইউক্রেনের কোন সাবমেরিন নেই।
  • ইউক্রেনের কোন ডেস্ট্রয়ার নেই, তবে রাশিয়ার রয়েছে ১৫টি। ইউক্রেনের একটি ফ্রিগেট থাকলেও রাশিয়ার রয়েছে ১১টি। মাইন ওয়ারফেয়ার নৌযান ইউক্রেনের একটা থাকলেও রাশিয়ার রয়েছে ৪৯টি।
  • রাশিয়ার করভেট রয়েছে ৮৬টি, যেখানে ইউক্রেনের আছে মাত্র একটি।
  • পেট্রোল ভেসেল রাশিয়ার রয়েছে ৫৯টি, ইউক্রেনের রয়েছে ১৩টি

উপরিউক্ত বিষয় পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইউক্রেইন থেকে রাশিয়া অনেক এগিয়ে। এখন দেখা যাক ইউক্রেইন আমেরিকার নিকট থেকে ২০০ কোটি টাকার অস্ত্র নিয়ে কি রাশিয়ার সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারে কি না ? রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধ সংবাদ সহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন। যুদ্ধ সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে নিচে কম্মেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *